বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মদের পার্টির টাকা জোগাতে ইজিবাইক চালককে হত্যা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২১ মে, ২০২৩ ১৫:৫৬

হত্যার এক দিন পর শনিবার স্থানীয়দের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শাকিলের মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ। ওই রাতে হত্যায় জড়িত চারজনকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

মদের টাকা সংগ্রহ করতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মঠবাড়ী এলাকায় কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে ইজিবাইক চালক শাকিলকে হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

হত্যার এক দিন পর শনিবার স্থানীয়দের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শাকিলের মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ। ওই রাতে হত্যায় জড়িত চারজনকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার চারজন হলেন মো. জনি, মো. শারাফাত, ইব্রাহিম চান ও সাব্বির হোসেন মেহেদী।

গ্রেপ্তারকৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা সুইস গিয়ার চাকু, আসামিদের ব্যবহৃত রক্তমাখা সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও লুণ্ঠিত ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে যা জানানো হলো

রোববার দুপুরে পুরান ঢাকার জনসন রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের আসামিদের কাছ থেকে পাওয়া বিস্তারিত তথ্য জানান ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান।

তিনি জানান, শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে স্থানীয়রা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় ফোন করে জানান, মঠবাড়ী পদ্মা রেলওয়ে সেতুর নিচে সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিনের পরিত্যক্ত ইটের খোলার ভেতরে একটি গলা কাটা মরদেহ পড়ে আছে। পরবর্তী সময়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। মরদেহ শনাক্ত করেন পরিবারের সদস্যরা।

স্থানীয়রা পুলিশকে আরও জানান, নিহত শাকিল দশম শ্রেণির ছাত্র। তার বাবা ছোটবেলায় মারা যায়। অসুস্থ মা ও ছোট ভাইয়ের সঙ্গে থাকত সে। নিজের পড়াশোনা, মায়ের চিকিৎসা ও সংসারের খরচ মেটাতে স্কুল শেষে প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ইজিবাইক চালাত শাকিল। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ইজিবাইক নিয়ে বের হলেও রাতে বাসায় ফিরেনি সে।

পুলিশ জানায়, শাকিলকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তার মাথা দেহ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। শাকিলের পিঠে ১১ বার ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। তার পেটের ডান পাশে ছুরিকাঘাত করায় নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়।

ঢাকার এসপি জানান, এ ঘটনায় শাকিলের বড় বোন সীমা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় জড়িতরা নিজেদের দায় স্বীকার করেছেন উল্লেখ করে ঢাকার পুলিশ সুপার বলেন, হত্যায় জড়িত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ও সবাই মাদকাসক্ত। গত বৃহস্পতিবার তারা ইজিবাইক ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। এরপর সেটির ব্যাটারি বিক্রির টাকা দিয়ে মদের পার্টি করার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার ইব্রাহিম চানের সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কাউটাইল ঘাটে টার্গেট ইজিবাইকের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। পরবর্তী সময়ে কোনো টার্গেট ইজিবাইক না পেয়ে শরাফত ও জনি কাটাইল ঘাট এলাকা থেকে সামনে এগিয়ে গিয়ে শাকিলকে পান।

পুলিশ জানায়, জনির পূর্ব পরিচিত হওয়ায় শাকিলকে নির্জন স্থানে নিয়ে যাওয়া সহজ হয়। পরে জনি, শরাফাত ও সাব্বির গাড়ি নিয়ে মঠবাড়ী পরিত্যক্ত ইটখোলায় যান। অপরদিকে ইব্রাহিম চান অটোরিকশা নিয়ে পিছু পিছু আসেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছানো মাত্রই পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শরাফাত সুযোগ বুঝে সুইস গিয়ার দিয়ে শাকিলের গলায় টান মারেন। এতে শাকিল ইজিবাইক থেকে পড়ে গিয়ে গলা চেপে ধরে চিৎকার শুরু করে। তখন জনি পেছন থেকে শাকিলের পিঠে এলোপাথাড়ি চাকু মারতে থাকে, কিন্তু তারপরও শাকিল চিৎকার ও দাপাদাপি করতে থাকায় জনি, সাব্বির ও ইব্রাহিম চান শাকিলের মাথা ও হাত-পা চেপে ধরে এবং শরাফাত শাকিলকে সুইস গিয়ার দিয়ে সামনে-পেছনে কেটে মাথা প্রায় বিচ্ছিন্ন করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

পুলিশ আরও জানায়, শরাফাত, জনি ও ইব্রাহিম চান অটোরিকশায় করে চলে যান। আর সাব্বির নিহত শাকিলের ইজিবাইক নিয়ে চলে যান। মূলত মদের পার্টির টাকার জন্যই তারা পূর্ব পরিচিত ইজিবাইক চালক শাকিলকে হত্যা করেন।

এ বিভাগের আরো খবর