মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার রাজধানীর শ্যামলী ক্লাব মাঠে ঢাকা উত্তর বিএনপি আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সংঘাত চাই না, নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। সেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। সেই ব্যবস্থা করুন। ২০১৮ সালে নির্বাচনে ডেকে নিয়ে বলেছিলেন- নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। কোনো অনিয়ম হবে না, কিন্তু কী হয়েছিল? দেখলাম ভোটের আগে বিএনপির প্রার্থীদের গ্রেপ্তার করে, মামলা দিয়ে রাতে ভোট করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার কথা- খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থাকা ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহার করতে হবে। একই সঙ্গে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তারপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন দিতে হবে।’
মামলা ও পুলিশি হয়রানি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, লোডশেডিং ও দুর্নীতির প্রতিবাদসহ নানা দাবিতে এই গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়। সারা দেশে ২৭টি স্পটে এক সঙ্গে সমাবেশ হয়। গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে খুলনায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশ-বিদেশে সব সমর্থন হারিয়ে ফেলেছে বলে দাবি করেন ফখরুল। বলেন, ‘এদের আর বেশিদিন সময় নেই। সব দলকে ঐক্যবদ্ধ করে একটা ঝড়ের গতির মতো আন্দোলন করতে হবে। এদের বিদায় করতে হবে। মানুষ রাস্তায় নেমেছে ভাত ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশে যতই চিল্লাচিল্লি আর ঘোরাঘুরি করেন লাভ হবে না। টিকতে পারবেন না, সময় নেই। সরকার টিকে থাকার জন্য মরণ কামড় দেবে। হাইকোর্ট জামিন দেন, কিন্তু নিম্ন আদালত এটা আটকে দেন। কোন পর্যায়ে গেছে দেশ।’
প্রধানমন্ত্রীকে গণভবন থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘আজ গ্যাস নাই, পানি নাই, কিন্তু দাম বারবার বৃদ্ধি করছেন। সারের দাম তিন- চার গুণ বৃদ্ধি করেছেন। গ্রামে বিদ্যুতের অভাবে সেচের পানি দিতে পারছেন না কৃষকরা। গণভবন থেকে বেরিয়ে আসুন, মানুষের চোখের ভাষা পড়ুন। মানুষের কী হাল করেছেন।’
ফখরুল বলেন, ‘সরকার উন্নয়নের কথা বলে কিন্তু মানুষ পেটের উন্নয়ন চায়, সাধারণ মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন চায়। কথা বলা যাবে না, কওয়া যাবে না, জীবন দিয়ে পেলাম আজব স্বাধীনতা। ঠিক কি না? সাংবাদিকরা লিখতে পারছেন না। কারণ ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন করে মুখ বন্ধ করেছে। লিখতে-বলতে ভয় পান সাংবাদিকরা।’
তিনি বলেন, ‘সরকার বলছে তারা নাকি ঝড় মোখাকে প্রতিরোধ করেছে। মোখা-করোনা প্রতিরোধ করা যায়, কিন্তু এ দেশের মানুষের ঝড়ে কীভাবে থাকবেন? থামাতে পারবেন না। নতুন করে আইন করতে যাচ্ছেন নির্বাচন কমিশন যেকোনো আসনের নির্বাচন বাতিল করতে পারবে না। তাহলে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা কোথায়? বাংলাদেশের সব মানুষকে বোকা মনে করেন? কতদিন প্রতারণা করবেন? পারবেন না।’
ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।