কৌশলে গ্রেপ্তার করতেই তাকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) ডাকা হয়েছে বলে মনে করছেন গাজীপুর সিটি নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের ছেলে ও তার প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
গাজীপুরের ছয়দানায় নিজ বাসভবন প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলনে শুক্রবার দুপুরে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় তার মা জায়েদা খাতুন সঙ্গে ছিলেন।
অভিযোগ করে জাহাঙ্গীর আলম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি যেন মানুষের কাছে ভোট চাইতে না পারি, আমাদের লোকজন এখানে যাতে ভোট চাইতে না পারে, তাই তারা কৌশলে আমাকে অ্যারেস্ট (গ্রেপ্তার) করার জন্য এবং আমার সময় নষ্ট করার জন্য দুদকে ডেকেছে।
‘আপনারা দেখেছেন গত ১৫ তারিখে দুদক থেকে আমাকে চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, আমি যেন ২১ ও ২২ মে দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত থাকি; গাজীপুর থেকে গিয়ে বসে থাকি। দুদক একটি সম্মানিত প্রতিষ্ঠান; এই প্রতিষ্ঠান যেন ধ্বংস না হয়। আমার মায়ের নির্বাচন পরিচালনার প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে বলতে চাই, দুদক নির্বাচনের আগে আমাকে যেন হয়রানি না করে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু দুদক নয়, আপনারা যে কোনো জায়গায় যে কোনো প্রতিষ্ঠানে যে কোনো সময় আমাকে ডাকবেন, আমি জবাবদিহিতার জন্য প্রস্তুত আছি। কিন্তু আইনের নামে বেআইনি কাজ যেন না করা হয়। সারা দেশের মানুষ জানে, নির্বাচন কমিশন জানে, আমি আমার মায়ের প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী। তাহলে আমাকে কেন ২১ ও ২২ তারিখেই ডাকা হলো?
‘২৩ মে প্রচার বন্ধ। এটি করা হয়েছে যাতে আমি মানুষের কাছে ভোট না চাইতে পারি। আমাদের লোকজন এখানে ভোট চাইতে না পারে।’
সংবাদ সম্মেলনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের পক্ষে তার কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।
গাজীপুর সিটির নির্বাচনে ২০১৮ সালে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হযেছিলেন জাহাঙ্গীর। বঙ্গবন্ধু ও দলকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে ২০২১ সালের নভেম্বরে বহিষ্কার হন তিনি।
এক পর্যায়ে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকেও তাকে সরানো হয়। তবে এ বছরের জানুয়ারিতে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলার শর্তে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে আওয়ামী লীগ।
এর মধ্যে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে আওয়ামী লীগ মেয়র পদে মনোনয়ন দেয় আজমত উল্লা খানকে। তিনি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি। অন্যদিকে দলের মনোনয়ন না পেয়ে জাহাঙ্গীর আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র কেনেন। পাশাপাশি মা জায়েদা খাতুনের নামেও মনোনয়নপত্র নেন তিনি।
ঋণখেলাপির জামিনদার হওয়ার কারণে গত ৩০ এপ্রিল জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। তবে তার মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।
প্রার্থিতা ফিরে পেতে জাহাঙ্গীর আলম হাইকোর্টে রিটও করেন। তবে তার করা রিট খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। সম্প্রতি তিনি আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার হয়েছেন।