খুলনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ ও বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছোঁড়ে পুলিশ।
শুক্রবার বিকেল ৪টায় খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। বিএনপির দাবি, এ ঘটনায় তাদের অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে আটক করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিএনপি জানায়, সরকারের পদত্যাগ, মামলা ও গণগ্রেপ্তার বন্ধ, সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদ এবং ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে খুলনা প্রেস ক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশের আহ্বান করে খুলনা মহানগর বিএনপি। সমাবেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের একটি মিছিলে বাঁধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংঘর্ষের সময় পুলিশ গুলি ছুঁড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা। তাদের দাবি, দিঘলিয়ার সেনহাটি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মুজিবুর রহমান, যুবদল নেতা জাহিদুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন অভিযোগ করে বলেন, ‘বিনা উসকানিতে পুলিশ সমাবেশে পণ্ড করতে গুলি, টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জ করেছে। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন ক্লিনিকে নিয়ে সেবা দেয়া হচ্ছে।’
বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করছে। কিন্তু খুলনায় কেন প্রত্যেকবার শান্তিপূর্ণ সমাবেশে এভাবে পুলিশ উসকানি দিয়ে টিয়ারশেল মারবে? পুলিশ আমাদের ওপর টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। আজকে আমাদের ১২ জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ, অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বক্তব্য শুরু করা মাত্রই মুহুর্মুহু টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করছিলাম। হঠাৎ করে টিয়ারশেল-গুলি নিক্ষেপ করা হয়েছে। বেশকিছু নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমাদের গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার আছে সভা-সমাবেশ করার। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা কেন আসবে?’
এ প্রসঙ্গে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির একটি কর্মীসভা ছিল। তারা খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে প্রোগ্রাম করছিল। কিন্তু তাদের নেতৃস্থানীয় নেতারা আসার পর বেশকিছু নেতাকর্মী রাস্তায় বসে যান; রাস্তা বন্ধ করে প্রোগ্রাম শুরু করেন। আমরা পেছনে সরে গেলে কিছু উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মী আমাদের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। আমরা বাধ্য হয়ে টিয়ারশেল ও গ্যাস গান নিক্ষেপ করি।
এ পর্যন্ত আমরা ১০ জনকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের বেশ কিছু সদস্যও আহত হয়েছেন। তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।’