বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাগরে মাছ ধরা ও সুন্দরবনে পর্যটক নিষিদ্ধ শনিবার থেকে

  • প্রতিনিধি, বাগেরহাট   
  • ১৯ মে, ২০২৩ ১৬:৫৬

আগামী ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে পর্যটকবাহী নৌযান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর ও বন বিভাগ। এর ফলে তিন মাস সুন্দরবনে পর্যটকদের যাতায়াত বন্ধ থাকবে।

প্রজনন মৌসুমে মাছের প্রজনন ও বংশবিস্তার নির্বিঘ্ন করতে বঙ্গোপসাগরে শনিবার (২০ মে) থেকে সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, যা চলবে ২৩ জুলাই পর্যন্ত। সে সঙ্গে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের নদী-খালগুলোতে মাছ শিকার করতে পারবেন না জেলেরা।

পাশাপাশি আগামী ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে পর্যটকবাহী নৌযান চলাচলও সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর ও বন বিভাগ। এর ফলে তিন মাস সুন্দরবনে পর্যটকদের যাতায়াত বন্ধ থাকবে।

শুক্রবার নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টি জানিয়ে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘৪৭৫ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। এই সময়টাতে কোনোভাবেই জেলেরা সমুদ্রে মাছ আহরণ করতে পারবেন না।’

নিষেধাজ্ঞার এ সময়ে সমুদ্রনির্ভর নিবন্ধিত ২ হাজার ৬৪০ জেলের প্রত্যেককে দুই দফায় ৮৬ কেজি করে চাল দেয়া হবে বলেও জানান জাহিদুল ইসলাম।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, ২০ মে থেকে মৎস্য অধিদপ্তরের জারিকৃত সাগরে নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে বন বিভাগেরও একাত্মতা আছে; তাই এ সময়ে মাছ ধরা বন্ধ থাকবে সুন্দরবনেও। এ ছাড়া ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মাছ ও বন্য প্রাণীর প্রজনন মৌসুম হওয়ায় এই সময়ে সুন্দরবনের নদী-খালেও কোনো প্রকার মাছ শিকার করতে পারবেন না জেলেরা। সে সঙ্গে বন্ধ থাকবে সুন্দরবনে পর্যটনবাহী নৌযান চলাচলও।

বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘নৌযান চলাচলে মাছের প্রজনন এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত ও নৌযানের বিকট শব্দে বন্য প্রাণীর বিচরণসহ প্রজনন কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়ে থাকে। তাই সুন্দরবনে জেলে ও পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ থাকে তিন মাস।’

সাগর-সুন্দরবননির্ভর জেলেদের সরকারি সহায়তার দাবি

এদিকে উপজেলার জেলেরা বলছেন, বছরের বিভিন্ন সময়ে মৎস্য অধিদপ্তর ও বন বিভাগের নিষেধাজ্ঞার কারণে জেলেরা সাগর এবং সুন্দরবনে মাছ ধরতে পারেন না। তার মধ্যে আবার দুর্যোগ তো রয়েছেই। ফলে উপকূলের জেলেদের বছরের বেশির ভাগ সময়টা কাটে খেয়ে না খেয়েই। তাই বিকল্প কর্মসংস্থানসহ নিষেধাজ্ঞা চলাকালে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকার মতো সরকারি সাহায্য দিতে হবে জেলেদের।

মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ২ হাজার ৬৪০ জন নিবন্ধিত জেলেকে সরকারি সহায়তা দেয়ার কথা জানালেও স্থানীয়দের দাবি, এখানে নিবন্ধিত ছাড়াও সাগরনির্ভর আরও আড়াই হাজার জেলে রয়েছেন। তাদের ভাগ্যে এ সহায়তা জুটবে না।

উপজেলার জেলেদের দাবি, মোংলায় সাগরনির্ভর জেলে রয়েছেন পাঁচ হাজারেরও বেশি। সে সঙ্গে সুন্দরবননির্ভর জেলে রয়েছেন আরও প্রায় পাঁচ হাজার। ফলে ১০ হাজারেরও বেশি জেলেকে এই নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ শিকার থেকে বিরত থাকতে হবে।

জেলেরা বলছেন, কোনো সাহায্য-সহযোগিতা না পেলে বেশিরভাগ জেলেকে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জীবন-জীবিকার তাগিদে ঝুঁকি নিয়ে নেমে পড়তে হয় সাগর-সুন্দরবনে।

উপকূলের জেলেদের সরকারি সাহায্য-সহযোগিতার ব্যবস্থা করা গেলে প্রজনন মৌসুম যেমন নির্বিঘ্ন হবে, তেমনই মাছ ও বন্য প্রাণীর সংখ্যাও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

মোংলার চিলা ও কলাতলা এলাকার সমুদ্র এবং সুন্দরবননির্ভর জেলে ইয়াসিন সরদার, সোবহান শেখ, মোহন বাছাড় ও ফারুক শেখ বলেন, ‘বছরের বিভিন্ন সময়ে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকে। যখন একটু মাছ ধরার সময় পাই, তখন আবার থাকে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস। বেশিরভাগ সময়ই নৌকা-জাল নিয়ে ঘাটে বসে থাকতে হয়।

‘মহাজনের কাছ থেকে দাদন বা ঋণ নিয়ে নৌকা ও জাল মেরামত করেছি। যাও মাছ-পোনা হতো, মহাজনকে দিয়ে কোনোরকম সংসার চলত। এখন তিন মাসেরও বেশি সময়ের এ নিষেধাজ্ঞায় আমাদের তো না খেয়ে মরতে হবে।’

ওই জেলেরা বলেন, ‘আমাদের তো জাল ধরা ছাড়া অন্য কোনো আয়ের পথ নেই। কোনো কাজ-কামও নেই যে তা করে খাব। সরকার যদি আমাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও সাহায্য-সহযোগিতা করে, তাহলে কোনোরকম বেঁচে থাকতে পারব।’

এ বিভাগের আরো খবর