জন্মের ১০ দিনের মাথায় মা হারানোর চার বছর পর পাবনার এক শিশুকন্যাকে নানীর হেফাজতে রাখতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বাবার কাছে থাকা ওই শিশুর মতের ভিত্তিতেই আদালত তাৎক্ষণিক শিশুটিকে নানীর হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি কে এম ইমরুল কায়েশের বেঞ্চ এ রায় দেয়।
আদালতের নির্দেশনা অনুসারে সাবালিকা হওয়া পর্যন্ত শিশুটি নানীর কাছে থাকবে। তবে তার ভরণপোষণ বাবাকেই দিতে হবে।
আদালতে নানী জাহানারা বেগমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুল হাই সরকার, বাবা ফজলে রাব্বীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শহীদুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন (মানিক)।
আদালতে করা আবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩০ মে জন্মগ্রহণ করে শিশুটি। জন্মের ১০ দিন পর শিশুটির মা মারা যায়। তখন থেকে সে তার নানী ও খালার কাছে থেকে লালিত-পালিত হচ্ছিল।
শিশুটির বয়স যখন ৫ মাস, তখন তাকে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হন শিশুটির বাবা।
ওই আবেদনের শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ৫ নভেম্বর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত শিশুটিকে নানী ও খালার হেফাজতে রাখার আদেশ দেন।
সে সময় নানীর হেফাজতে অন্তত ৭ বাছর রাখার কথা বলে বাবাকে শিশুটির খরচ বহনের আদেশ দেন আদালত। এই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন আবেদন করেন বাবা ফজলে রাব্বী।
সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০২২ সালের ২২ সেপ্টম্বর পাবনার অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত শিশুটিকে বাবার হেফাজতে দেন। পরে সেই আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আসেন নানী।
হাইকোর্ট নানীর আবেদনের শুনানি নিয়ে রুল জারি করে শিশুসহ বাবা ও নানীকে উচ্চ আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন। নির্দেশ অনুসারে বৃহস্পতিবার উভয়পক্ষ উচ্চ আদালতে হাজির হয়।
এরপর আদালত শিশুর কাছে জানতে চায়, সে কার কাছে থাকতে চায়। জবাবে শিশুটি নানীর কাছে থাকার কথা বলে। ফলে বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে শিশুটিকে নানীর জিম্মায় দেন উচ্চ আদালত।