খুন করেও জামিনে মুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু জামিন নিয়েই পালিয়ে যান সেকান্দার আলী। অবশেষে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় শাহজাহান হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি সেকান্দার।
বুধবার রাত আড়াইটার দিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কাশিমপুর থানার জিরানী এলাকা থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
৪০ বছর বয়সী সেকান্দার আলী ফুলবাড়ীয়া থানার শ্রীপুর গ্রামের মৃত রাজ মাহমুদ ফকিরের ছেলে।
র্যাব জানায়, হত্যার শিকার শাহজাহান তার পার্শ্ববর্তী রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে দ্বিতীয় বিয়ে করে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু তার প্রথম স্ত্রী সাজেদা স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। ফলে শুরু হয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্ব। এ দ্বন্দের জেরে সাজেদা তার স্বামী শাহজাহানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে টাকার বিনিময়ে ভাড়া করেন সেকান্দার আলীকে।
২০১৬ সালের ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় সেকান্দার শাহজাহানের বাড়িতে ঢুকে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে মরদেহ বাড়ির পাশের একটি পুরনো কুয়ার মধ্যে ফেলে রাখেন।
ওই হত্যাকাণ্ড অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য সাজেদা নিজেই সে সময় থানায় বাদী হয়ে শাহজাহানের দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ সদর দপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঘটনার তিনমাস পর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে মূল রহস্য উদঘাটন করে। সে সময় ঘটনার সাথে জড়িত সেকান্দার গ্রেপ্তার হন। সেকান্দার আলীর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শাহজাহানের মরদেহ কুয়া থেকে উদ্ধার করা হয়। হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দেন তিনি।
‘তবে ওই বছরই সেকান্দার জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। এদিকে সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং হত্যা করে মরদেহ গুম করার অপরাধে আরও সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক।’
আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সেকান্দারকে গ্রেপ্তার করতে র্যাবের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছিল। বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে দীর্ঘ সাত বছর দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিজের পরিচয় গোপন করে গা ঢাকা দিয়ে পালিয়ে ছিল।’
সেকান্দার আলীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।