বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গাজীপুরে ইসলামী আন্দোলন প্রার্থীর ৩৪ দফা ইশতেহার

  •    
  • ১৭ মে, ২০২৩ ২০:৪৮

নির্বাচিত হলে নগরবাসীর জন্য স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত, বিশেষজ্ঞ কমিটি, নগর সরকার, দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড ও জাকাত বোর্ড গঠন করবেন বলে ইশতেহারে উল্লেখ করেন হাতপাখা প্রতীকের এ প্রার্থী।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩৪ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের পর তিনিই প্রথম ইশতেহার ঘোষণা করলেন।

নির্বাচিত হলে নগরবাসীর জন্য স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত, বিশেষজ্ঞ কমিটি, নগর সরকার, দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড ও জাকাত বোর্ড গঠন করবেন বলে ইশতেহারে উল্লেখ করেন হাতপাখা প্রতীকের এ প্রার্থী।

৩৪ দফা ইশতেহার তুলে ধরে ‘জয়ী হলে নগর ভবন ধনী-গরিব সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে’ বলে ঘোষণা দেন তিনি। এছাড়া ইশতেহারে থাকা কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে গাজীপুরকে একটি উন্নত ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মানবিক নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবেন বলেও তিনি ঘোষনা দেন।

বুধবার দুপুরে গাজীপুর প্রেসক্লাবের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে নগরবাসীর উদ্দেশে ৩৪ দফা কর্মসূচি সম্বলিত ইশতেহার তুলে ধরেন গাজী আতাউর রহমান।

ইশতেহারে বলা হয়েছে, নির্বাচিত হলে গাজীপুর সিটিকে দুর্নীতি মুক্ত করা হবে। সে সঙ্গে বিগত সকল দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে। জবাবদিহিতামূলক সিটি করপোরেশন করে গড়ে তোলা হবে। ওয়ান স্টপ সেবা প্রদান করা হবে। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি নগর বিশেষজ্ঞ টিম গঠন করা হবে।

বিশিষ্ট নাগরিক ও আলেমদের নেতৃত্বে নাগরিক কমিটি গঠন করা হবে। নগর সরকার গঠন করা প্রয়োজন। নগর সরকারে মেট্টোপলিটন কাউন্সিল থাকবে। মহানগরের প্রতিটি পরিবারকে সমন্বিত সুপেয় পানি সরবরাহের আওতায় আনা হবে। সারফেস, গ্রাউন্ড ও রেইন ওয়াটারের পরিকল্পিত বৈজ্ঞানিক ব্যবহার করা হবে। ২৬০টি খাস পুকুর দখলমুক্ত করে তাতে পানি সংরক্ষণ করা হবে। পানি দূষণমুক্ত করা হবে।

নদীকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানো হবে। নগরীর জন্য শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা প্রণয়ন করা হবে। দূষণ প্রতিরোধে দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড প্রতিষ্ঠা করা হবে। গাজীপুরে খাদ্যে ভেজাল নিয়ন্ত্রণে নিজস্ব মান নিয়ন্ত্রণ বোর্ড প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে পার্ক ও খেলার মাঠ নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি বাসাবাড়িতে গ্যাস ও পানির সংযোগ দেয়া হবে। ওয়ার্ডভিত্তিক কবরস্থান ও শ্মশান নির্মাণ করা হবে। স্বাক্ষরতার হার শতভাগ করতে মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাভিত্তিক গণস্বাক্ষরতা কর্মসূচি চালু করা হবে। ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সম্মানজনক বেতন-ভাতা ধার্য করা হবে।

গাজীপুরকে সকলের জন্য নিরাপদ ও আধুনিক সুবিধাসম্বলিত একটি নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। পুরুষ ও নারী শ্রমিকদের আলাদা আলাদা আবাসন, হাসপাতাল ও পরিবহনের ব্যবস্থা করা হবে। তাদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হবে। শ্রমিকদের অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য সার্বক্ষণিক (২৪/৭) কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হবে।

বিশ্ব ইজতেমার মাঠ আধুনিকায়ন করা হবে। মুসল্লীদের চিকিৎসার জন্য ইজতেমা মাঠের পাশে ইজতেমা হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে। টঙ্গী ও জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনকে আইকনিক স্টেশনে পরিণত করা হবে। গাজীপুরে যানজট নিরসনে দীর্ঘ ও স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনা ও কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে।

শহরজুড়ে আন্তঃনগর পরিবহনের ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা করা হবে। যানজট নিরসনে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্মার্ট পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। ভিক্ষুক, পাগল, বেওয়ারিশ ও পথবাসী মানুষের জন্য গাজীপুরে পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।

এছাড়াও গাজীপুর নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিমুক্ত নগর ভবন, বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণ ও নদী দূষণ রোধ, পানি সমস্যা সমাধান, নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রদান, ফুটপাত দখলমুক্ত, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নগর স্বাস্থ্য প্রণয়ন, ধনী-গরিব সবার জন্য উন্মুক্ত নগর ভবন, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, বাসা ভাড়া প্রণয়ন, হকার, ছিন্নমূল ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের পুনর্বাসন, নারীবান্ধব গণপরিবহন, সমাজ নিয়ে উন্নয়ন চিন্তা, হকার, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত নগর গড়া, সার্বিক উন্নয়ন করার পরিকল্পনাসহ ৩৪ দফা কাজ করবেন।

এই ইশতেহার বাস্তবায়নে নগরবাসীর মতামত নেবেন বলেও তিনি জানান।

লিখিত বক্তব্যে গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘আপনারা সম্মিলিতভাবে গাজীপুরের সমস্যার সমাধান করতে চাইলে এবং গাজীপুরকে বাসযোগ্য টেকসই, উন্নত, আধুনিক সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে চাইলে হাতপাখা মার্কায় ভোট দিন। যদি সুস্থ পরিবেশে বাঁচার জন্য অশুভ, কায়েমি ও স্বার্থবাদী সিন্ডিকেটকে অবশ্যই ভাঙতে হবে এবং গাজীপুর সিটিকে রক্ষা করতে হবে।

‘কাউকে ভোট দেয়া কোনো আবেগ বা দলীয় বিষয় নয়। এটি একটি নৈতিক বিষয়। যাকে তাকে ভোট দেয়া ইসলামসম্মতও নয়। ইসলাম, দেশ ও মানবতার জন্য ক্ষতিকর ব্যক্তিকে ভোট দেয়া মারাত্মক গুনাহের কাজ। দলীয়, আবেগ, ব্যক্তি প্রভাব, আত্মীয় বা প্রতিবেশী হওয়া ভোট পাওয়ার যোগ্যতা নয়। তিনিই ভোট পাওয়ার যোগ্য যার দ্বারা সমাজ, মানুষ ও সম্পদের লুণ্ঠন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও ক্ষতি হবে না।’

জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে জনগণের মুখোমুখি হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন মাওলানা আতাউর।

এ সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজীপুর মহানগর সভাপতি ফাইজ উদ্দিন আহমদ, সহ-সভাপতি মাওলানা এম এ হানিফ সরকার, যুগ্ন সম্পাদক অধ্যক্ষ মুফতি শহীদুল ইসলাম, সহকারী সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম সাইদুর রহমান, প্রচার ও দাওয়া বিষয়ক সম্পাদক এস এস ওয়াহিদুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক, যুব অন্দোলনের মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা আব্দুল হালিম চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর