ছিনতাই করা একটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে রাতভর রাজধানীর নির্জন সড়কগুলোতে ঘুরে ঘুরে ছিনতাই-ডাকাতি করে আসছিল একটি চক্র। সম্প্রতি রাজারবাগ বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সামনে ছিনতাইয়ের শিকার হন এক নারী কনস্টেবল। এই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে ধরা পড়েছে এই ডাকাত দলের চার সদস্য।
রাজধানীর মহাখালী থেকে সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় সোহেল, আক্তার অরফে সোহরাব, আবির হোসেন ওরফে রাসেল ও রনি নামের এই চার ছিনতাইকারীকে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই-ডাকাতিতে ব্যবহার দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র, লুন্ঠিত টাকা, ৪টি স্মার্ট মোবাইল ও ৩টি বাটন মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। একইসঙ্গে উদ্ধার করা হয় ছিনতাই কাজে ব্যবহার করা পিকআপ ভ্যানটি।
মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের এসব তথ্য জানান মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার মো. হায়াতুল ইসলাম খান।
তিনি জানান, এই চক্রের সদস্যরা পিকআপ ভ্যানটি ৫-৬ দিন আগে ছিনতাই করে। এই গাড়ি নিয়ে তারা রাতে পথচারী ও রিকশাযাত্রীদের সুবিধাজনক স্থানে গতিরোধ করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ছিনতাই করে আসছিল।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, ১২ মে ভোর রাত ৪টার দিকে ছিনতাইয়ের শিকার হন মালিবাগে স্পেশাল ব্রাঞ্চে কর্মরত নারী কনস্টেবল। ভিভিআইপি ডিউটির জন্য ভোরে রিকশাযোগে অফিসে যাওয়ার সময় রাজারবাগ বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সামনের মোড়ে তিনি ছিনতাইয়ের শিকার হন।
পেছন থেকে আসা একটি হলুদ ও নীল রংয়ের পিকআপ ভ্যান নারী কনস্টেবলকে বহনকারী রিকশাকে চাপ দেয়। এরপর পিকআপ থেকে দুজন নেমে আসে। নারী কনস্টেবলকে গলায় চাকু ধরে একটি স্বর্ণের চেইন, দুটি মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, আইডি কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে পিকআপ গাড়িটিতে চড়ে দ্রুত ডান দিকে মোড় নিয়ে শাহজাহানপুরের দিকে চলে যায়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কনস্টেবল পল্টন থানায় মামলা করেন। এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে জড়িত চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে মতিঝিলের ডিসি হায়াতুল ইসলাম জানান, একই কায়দায় ১২ মে মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় একটি এবং ১৩ মে তেজগাঁও ও বনানী থানা এলাকায় আরও দুটি ডাকাতির ঘটনা ঘটায় তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার সোহেলের বিরুদ্ধে দুটি, আক্তার ওরফে সোহরাবের বিরুদ্ধে ৬টি, আমির হোসেন রাসেলের বিরুদ্ধে ৫টি এবং রনির বিরুদ্ধে ৮টি মামলা রয়েছে।