রাজনৈতক অঙ্গনের মতো সংসার জীবন নিয়েও টালমাটাল অবস্থায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ থেকে সদ্য স্থায়ী বহিস্কার হওয়া গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
সোমবার জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী কাজী রাজিয়া সুলতানা জয়ীর দেয়া তালাকের ছবিসহ একটি খবর বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
জয়ীর অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই মানসিক নির্যাতন, অত্যাচার এবং ভরণপোষণ না দেয়ায় সংসারে অশান্তি বিরাজ করছিল অনেকদিন ধরেই। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল জাহাঙ্গীর আলমকে তালাকের নোটিশ পাঠান তার স্ত্রী।
তবে বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন জাহাঙ্গীর। নিকটাত্মীয়রাও এ বিষয়ে কোন কথা বলতে নারাজ।
মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর ছয়দানা এলাকায় নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
এসময় তালাকের নোটিশ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিব্রত হয়ে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিবারেরটা পরিবার....। আমরা এখন রাজনৈতিক কারণে সংবাদ সম্মেলন করছি। ২৫ তারিখে ভোট। আপনারা আপাতত ভোটটা নিয়ে থাকুন।
‘এখন অনেকেই অনেক ধরনের ভালো-খারাপ কথা বলবে। এটা তাদের ব্যাপার। আমরা কারো পরিবার, কারো ব্যক্তিত্ব নিয়ে কথা বলতে চাই না। যদি কেউ ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলতে চান, তাহলে আসেন আমার বাসায়, বসেন, শুনে যান।’
স্ত্রীর পাঠানো তালাকের ওই নোটিশে দেখা যায়, ২০১১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুরের বাসিন্দা কাজী ইকবাল বাহারের মেয়ে কাজী রাজিয়া সুলতানা জয়ীর সঙ্গে গাজীপুরের বাসিন্দা মিজানুর রহমানের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে জাহাঙ্গীর আলম স্ত্রীকে মানসিক নির্যাতন ও অত্যাচার ও নিয়মিত ভরণপোষণ না দেয়ায় সংসারজীবনে অশান্তি শুরু হয়।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন ৮ নম্বর অধ্যাদেশ, ৫২ নম্বর আইনের ৭(১) ধারায় সম্পর্কের বিষয়টি অবহিত করা হলো। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি না হলে ৯০ দিন পর চূড়ান্তভাবে তালাক কার্যকর হবে।
তালাকের এই নোটিশের অনুলিপি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র এবং মিরপুর শাহআলী কাজী অফিসে পাঠানো হয়।
সোমবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় গাজীপুরের বহিষ্কৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করে দলটি। দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি শর্তসাপেক্ষে ক্ষমা করে ফের তাকে দলে নেয় আওয়ামী লীগ। তবে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে মা জায়েদা খাতুনের পক্ষে প্রচারণায় নেমে পূণরায় বহিষ্কার হন জাহাঙ্গীর আলম।