বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তাপদাহে স্বাদ কমেছে মেহেরপুরের আমের, দাম নিয়ে শঙ্কা   

  •    
  • ১৬ মে, ২০২৩ ১০:৫৬

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার নিউজবাংলাকে জানান, মূলত চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও দাবদাহের কারণে অনেক গাছের আম আগেই পেকে গেছে। সেগুলো তুলনামূলকভাবে আকারে ছোট হওয়ার পাশাপাশি স্বাদও কিছুটা কমেছে। তবে প্রকৃতির ওপরে তো কারোর হাত নেই। এখন যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে আগামী ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ‍্যে যেসব আম পরিপক্ব হবে, সেগুলোর স্বাদ কিছুটা বাড়বে। তাছাড়া এবারও মেহেরপুরের হিমসাগর আম দেশের বাহিরে রপ্তানি করা হবে।

কৃষিনির্ভর মেহেরপুরের তিনটি উপজেলার ফলের বাজারসহ অনেক দোকানে সপ্তাহখানেক ধরেই পাকা আম বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও প্রচণ্ড দাবদাহে আগাম আম পাকতে শুরু করলেও আমের আকার ছোট হওয়াসহ তুলনামূলকভাবে মিষ্টতা কমে গেছে। এ দিকে স্বাদ কমে যাওয়ার ফলে আমের ভালো দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন জেলার আমচাষিরা।

জেলার আম ক্রেতারা জানান, এ বছর বাজারে যে আম পাওয়া যাচ্ছে তা আগেরবারের মতো মিষ্টি নয়, আর রসালো নয়। আবার আকারেও ছোট।

আম ক্রেতা পল্লি চিকিৎসক জালাল উদ্দিন বলেন, ‘সপ্তাহখানেক ধরে বাজারে পাকা আম বিক্রি শুরু হয়েছে। আমি বাসার জন‍্য তিন কেজি আম কিনলাম। তবে এ বছর আমের সাইজ গত বছরের তুলনায় অনেকটাই ছোট। বাড়িতে গিয়ে আম কাটার পর দেখা যায়, আমের রং ভেতরে সব ঠিকঠাক থাকলেও রসের পরিমাণ কম। সেই সঙ্গে খেতেও বেশ টক।’

আরেক ক্রেতা স্বর্ণ ব‍্যবসায়ী মামুন বলেন, ‘আম দেখতে খুব সুন্দর হলেও আমের স্বাদ এ বছর অন‍্য বছরের তুলনায় কম। আবার আম খাওয়ার পরে মুখও চুলকাচ্ছিল।’

বাগানের মালিকরা জানান, তীব্র দাবদাহের ফলে গাছের আম তুলনামূলক আকারে বড় না হলেও আগেভাগেই হলুদ বর্ণ ধারণ করে পেকে যাচ্ছে। তাই আম পেড়ে ফেলতে বাধ‍্য হচ্ছেন তারা।

আমবাগানের মালিক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বাগানে ৩০০-এর মতো আমের গাছ আছে। এবার শুরু থেকেই বাগানে সেচ দেয়া হয়েছে। এখনও তা চলমান। এ বছর গাছে আম ঠেকাতেই অনেক খরচ হয়ে গেছে। তারপর দেখা গেল, গাছের আম তুলনামূলক অন‍্যবারের চেয়ে ছোট। আবার আমও আগেভাগে পাকতে শুরু করেছে। সে হিসেবে মনে হচ্ছে, আমে এবার পয়সা পাওয়াটা কঠিন হয়ে যাবে।’

জেলার আমচাষি ও ব‍্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কৃষিনির্ভর মেহেরপুরে আবহাওয়াজনিত কারণে প্রতিবছরের মতো এবারও অন‍্য জেলার তুলনায় আগেভাগেই আম সংগ্রহ শুরু হয়ে গেছে।

আম ব‍্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আজ থেকে ১৫-২০ দিন আগেই আম পাকতে শুরু করেছে। আমরা বেশি মুনাফার আশায় বেশি দাম দিয়েই সেই গাছের আম কিনে বাজারে বিক্রি শুরু করেছি। তবে আম বিক্রির পরে অনেক ক্রেতা অভিযোগ করেছেন, আমে রস ও মিষ্টি অনেক কম।’

আরেক আম ব‍্যবসায়ী গাংনী উপজেলার রমিক হাসান বলেন, ‘আমরা ছয়জন মিলে প্রায় ৭০ বিঘা জমির আমের বাগান কিনেছি। বাগান কেনা অনেকটা জুয়া খেলার মতো। আপনি হারতেও পারেন জিততেও পারেন। কেননা, আমরা গাছে আমের মুকুল দেখে বাগান কিনে থাকি। তারপর গাছে গুটি দাঁড়ানো, সেগুলো পরিচর্যার মাধ‍্যমে ঠেকানো, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করা- অনেক ব্যাপার রয়েছে। এরপর আসে বাজারে ভালো দাম পাওয়ার প্রশ্ন। এবারে আমগুলো আকারে বেশ ছোট। যে আম চার থেকে পাঁচটায় এক কেজি ওজন হয়, সেই আম এবার সাতটায় এক কেজি হচ্ছে। আবার খেতেও টক। শেষ পর্যন্ত আমের দাম ঠিক না থাকলে আমাদের লোকসানে পড়তে হবে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ‍্য অনুযায়ী, জেলা প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী ১৫ মে থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত গাছ থেকে আম সংগ্রহ করা হবে। মেহেরপুরে চলতি মৌসুমে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমির আমবাগানে প্রায় ৪৫ হাজার টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে হিমসাগর আমের বাগান রয়েছে ৭০০ হেক্টর জমিতে। চলতি সময়ে ৪০ টন হিমসাগর আম দেশের বাইরে রপ্তানি করার সম্ভাবনা রয়েছে।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার নিউজবাংলাকে জানান, মূলত চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও দাবদাহের কারণে অনেক গাছের আম আগেই পেকে গেছে। সেগুলো তুলনামূলকভাবে আকারে ছোট হওয়ার পাশাপাশি স্বাদও কিছুটা কমেছে। তবে প্রকৃতির ওপরে তো কারোর হাত নেই। এখন যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে আগামী ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ‍্যে যেসব আম পরিপক্ব হবে, সেগুলোর স্বাদ কিছুটা বাড়বে। তাছাড়া এবারও মেহেরপুরের হিমসাগর আম দেশের বাহিরে রপ্তানি করা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর