বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতের সমর্থকদের ওপর পিস্তল ঠেকিয়ে অতর্কিত হামলার অভিযোগে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্না ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে মহানগর আওয়ামী লীগ।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল নগরীর সোহেল চত্বরস্থ দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম জাহাঙ্গীর।
তবে নৌকা বা প্রার্থীর বিরুদ্ধে এ সংবাদ সম্মেলন নয় জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘রোববার রাত ১২টার দিকে বরিশাল নগরীর হাসপাতাল রোড থেকে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্নাকে তার সাতজন কর্মীসহ কাউনিয়া থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে রইজ আহম্মেদ মান্নাকে গ্রেপ্তার করার যে কারণ দেখিয়েছে মূলত ঘটনাস্থল তো দূরে থাক ঘটনাস্থলের দুই কিলোমিটারের মধ্যেই রইজ আহম্মেদ মান্না ছিলেন না।
‘এমনকি এই ঘটনা সম্পর্কিত কোনো ভিডিও ফুটেজও কেউ উপস্থাপন করতে পারেনি। আমরা বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ গত রাতের ঘটনাটির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি যে, উল্লেখিত ঘটনাটির নিরপেক্ষ তদন্ত পূর্বক প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করার।’
এসময় তিনি মৌখিক বক্তব্যে বলেন, ‘বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ আমরা ঐক্যবদ্ধ, আওয়ামী লীগের প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষে আমরা বিভিন্নভাবে কাজ করছি, আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতীক বরাদ্দের পরেই আমাদের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন নিয়ে ত্রিশটি ওয়ার্ডে নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনা করব। আজকে নৌকা বা প্রার্থীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনটা না। আবারও বলছি আমরা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ, আমাদের প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত। মনোনয়ন বোর্ড সুন্দর একটি মানুষকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দিয়ে বরিশালের মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটা বিশেষ গোষ্ঠীর ইন্ধন রয়েছে এখানে। আমাদের প্রাণের নেতা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের ছেলে ও দক্ষিণাঞ্চলের রাজনৈতিক অভিভাবক আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ছোটভাই খোকন সেরনিয়াবাতের নমিনেশনকে কেন্দ্র করে এই নির্বাচনকে অভ্যন্তরীণ একটি মহল বিভিন্নভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাচ্ছে।’
তবে কাদের ইন্ধন বা কাদের ইন্ধনে এমনটা হচ্ছে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে বলেন, ‘আপনারা সবই জানেন।’
এদিকে এই সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগের একাংশের অবস্থানের বহিঃপ্রকাশ কি না জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থীর তিনজন কর্মী হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে রয়েছে। যারা হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আহতদের পরিবার মামলা করেছে। যে মামলার বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করেছে। পুলিশ যেটার তদন্ত করেছে সেটার বিষয়ে ওনারা সংবাদ সম্মেলন করে কিভাবে সেটা আমরা বুঝতে পারছি না। ওনারা কি এজেন্ডা দিতে চায়, কি বার্তা দিতে সেটা তাদের প্রশ্ন করুন।’
এদিকে হামলায় আহত কর্মীদের দেখতে গত রাতেই বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। আর ওই রাতেই হামলায় আহত মনা আহম্মেদ বাদী হয়ে কাউনিয়া থানায় বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্নাসহ ২১ জন নামধারী ও অজ্ঞাত ৪০ থেকে ৫০ জনের নামে মামলা করেন। যে মামলায় রইজ আহম্মেদ মান্নাসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ও পুলিশ।