ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে সাগর উত্তাল হওয়ার পাশাপাশি প্রবল বাতাস বইছে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপে। এমন পরিস্থিতিতে দ্বীপের মানুষকে স্কুল কিংবা মাদ্রাসায় আশ্রয় নিতে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে, কিন্তু আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে গাফিলতি করতে দেখা যায় দ্বীপের অনেক বাসিন্দাকে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ এরই মধ্যে কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এটি আজ বিকেলের মধ্যে কক্সবাজার ও মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়ার ইউপি সদস্য আবদুস সালাম বলেন, ‘আজ ১২টার দিকে বৃষ্টি ও বাতাসের গতিবেগ বেড়ে যাওয়ায় আমি নাফ নদীর তীরের মানুষকে বুঝিয়ে জোরপূর্বক আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিচ্ছি, কিন্তু বয়স্ক মানুষ না বুঝে গাফিলতি করে ঘরে বসে রইছেন। বাতাসের গতিবেগের সাথে সাথে নাফের পানি বাড়ছে। আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসতে আমি সর্বাত্মক কাজ করছি।’
জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা আফিফা খাতুন (৫০) বলেন, ‘এসব তুফান নিয়ে আমি কী করব? আমি বাড়িঘর ছেড়ে কেন অন্য জায়গায় চলে যাব? আমার বাড়িতে বহু মালামাল আছে। আল্লাহ আমাদের বাঁচাবে। মোখা-তোকা কি এসব কিছুই বুঝি না আমি।’
শাহপরীর দ্বীপের অনেক মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের নামই জানেন না। তাদের বাড়ি নাফ নদীর তীরে। পুলিশ সদস্যরা এসে বুঝিয়ে তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছে দিচ্ছেন।
শাহপরীর দ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই তারেকুর রহমান বলেন, ‘ভাই, এদেরকে বোঝানো কঠিন, তবে এখন বাতাসের গতিবেগ বেড়ে যাওয়ায় ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটছে অনেকেই।’
দ্বীপের ১০ বছরের শিশু মিসকাত বলে, ‘ঘূর্ণিঝড় আসছে। আমি শুনছি। পানি উঠবে বলেও মাইকিং করছে। তাই আমি আমার বইপত্র নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাব।’
শাহপরীর দ্বীপে নাফ নদীসংলগ্ন জালিয়াপাড়া ঘুরে দেখা যায়, কিছুসংখ্যক মানুষ এখনও ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে অবগত নন। আবার কেউ কেউ জানলেও তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ওই এলাকার বাড়িগুলো সামান্য জোয়ারের পানিতেই তলিয়ে যায়। সেগুলোর অবস্থাও বেহাল।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া আছে মানুষকে বুঝিয়ে নিজ দায়িত্বে আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে। সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে মাইকিং করছি। সার্বক্ষণিক সেন্ট মার্টিন দ্বীপের খোঁজখবর রাখছি।’