সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা অতি-উৎসাহ দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এগুলো চলতে থাকলে নির্বাচনে প্রার্থী নাও হতে পারেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার দুপুরে সিলেটের একটি হোটেলের কনফারেন্স হলে রোটারেক্ট ক্লাব অব সিলেট সিটি আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মেয়র।
নির্বাচনের আগে প্রশাসনের কর্মকাণ্ডে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা অতি-উৎসাহী হয়ে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। ব্যাপক হারে ধড়পাকড় হচ্ছে। অনেক কর্মকর্তাকে বদলিও করা হচ্ছে। এগুলো নির্বাচনকে প্রভাবিত করারই ইঙ্গিত।
‘যদি আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াই, তাহলে বুঝতে হবে প্রশাসনের কিছু অতি-উৎসাহী কর্মকর্তার কর্মকাণ্ডের প্রতি গভীর সন্দেহ থেকেই এ কাজ করেছি।’
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে নির্বাচনের প্রতি আস্থা ফেরানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, ‘প্রশাসন গণহারে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করছে।’
এবারের সিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি। তবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন বলে শুরু থেকেই গুঞ্জন রয়েছে। এমন গুঞ্জনের মধ্যে ১ মে নগরীতে একটি অনুষ্ঠানে প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে কোনো সিটি নির্বাচনে আমার দল বিএনপি অংশ নেবে না। তবে সিলেটের প্রেক্ষাপটে আমরা নির্বাচে যাবো।’
আরিফের এ বক্তব্যের পর দলের ভেতরে ও বাইরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আরিফকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে বিএনপির বিভিন্ন মহল থেকে নানামুখী তৎপরতা শুরু হয়েছে।
অপরদিকে, মেয়র আরিফও নিজের হিসেব মেলাতে শুরু করেছেন।
২০ মে নগরীর রেজিস্টারি মাঠে সমাবেশ করে প্রার্থিতার ব্যাপারে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র আরিফুল হক।
তার আগে শনিবার প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রার্থী নাও হতে পারেন বলে ইঙ্গিত দেন।
এ সময় ইভিএম নিয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ইভিএমের সাথে নগরীর মানুষজন একেবারেই পরিচয় নেই। নির্বাচনের ৬ মাস আগে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা ছিলো। অথচ ভোটাররা এখন পর্যন্ত ইভিএম সম্পর্কে কিছুই জানেন না।’
তার (মেয়র আরিফ) জন্য বিএনপি বা আওয়ামী লীগের কোনো চাপ নেই মন্তব্য আরিফুল হক বলেন, ‘সবগুলো দল নিজেদের অবস্থানে অনড়। এখানে ব্যক্তি আরিফ কোনো বিষয় নয়।’
অহেতুক ব্যক্তি আরিফকে নিয়ে ঢালাওভাবে মন্তব্য না করতে রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
নিজে সিলেট মহানগরীর সকল মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত বলেও এসময় উল্লেখ করেন মেয়র।
আগামী ২১ জুন ইভিএমে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার পর্যন্ত মেয়র পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন পাঁচজন।
তারা হলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান এবং তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল হানিফ ওরফে কুটু, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান খান ও সামছুন নুর তালুকদার।
জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী দলটির মহানগর শাখার আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম বাবুল শুক্রবার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ না করলেও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।