ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র কারণে কক্সবাজারে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
প্রবল ঝড়ের আশঙ্কায় উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে আনছে স্থানীয় প্রশাসন। শনিবার বিকেল পর্যন্ত অর্ধ লাখ মানুষ বসতঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন।
এদের মধ্যে কক্সবাজারের নাজিরারটেক, সমিতিপাড়া, মহেশখালীর ধলঘাটা, সোনাদিয়া, ঘড়িভাঙ্গা ও কুতুবজোম, টেকনাফের বাহারছড়া, শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা বেশি।
নাজিরারটেকের শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার রাত ২টার পর ঘরে পানি ঢুকতে শুরু করে। বৃষ্টি ও হালকা বাতাস ছিল। তাই পরিবার নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছি। ভয় লাগছে।’
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, ‘সব হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা সমন্বয় করে কাজ করছে। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে যাদের ঘরবাড়ি দূরে তাদের আনতে বিনা মূল্যে গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপকূলের সব মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রমুখী হয়েছে। আজ সন্ধ্যার মধ্যে সবাই আশ্রয়কেন্দ্র চলে আসবে।’
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, ‘হোটেলগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করতে আমাদের কাছে নির্দেশনা এসেছে। আপাতত ৭৮টি হোটেল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মানুষের সংখ্যা বাড়লে সব হোটেল ব্যবহার করব।’
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ‘সকাল থেকে আমরা জেলার ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দিয়েছি। এ পর্যন্ত ৪৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এই সংখ্যা আরও বাড়বে।’
জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণকক্ষ জানায়, সেন্ট মার্টিনে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও পুলিশের ভবনসহ ৩৭টি সরকারি স্থাপনা রয়েছে। এগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে।
জেলায় প্রস্তুত রাখা ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৫ লাখ ৫ হাজার ৯৯০ জন মানুষ থাকতে পারবে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের প্রধান আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। রোববার সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে মোখার আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।’