বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সেন্ট মার্টিনে যেভাবে থাকবে সাড়ে ৭ হাজার মানুষ

  •    
  • ১৩ মে, ২০২৩ ১৮:২৯

সেন্ট মার্টিনে ৪০ থেকে ৪২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এখানে অবস্থানরত ৭ থেকে সাড়ে ৭ হাজার মানুষ আশ্রয় নিচ্ছেন ওই সব আশ্রয় কেন্দ্রে। আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেয়া হোটেল ভবনগুলোর দোতলা ও তিনতলায় তারা অবস্থান করবেন। ইতোমধ্যে অন্তত দশদিনের খাবার ও পানি মজুত করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও সেন্ট মার্টিনসহ কাছাকাছি দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চলে ৮ থেকে ১২ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়ার তৎপরতাও চলছে।

ঝড়ের ঝুঁকির কেন্দ্রস্থলে রয়েছে দেশের সর্বদক্ষিণের দ্বীপ সেন্ট মার্টিন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানে ৪০ থেকে ৪২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এই দ্বীপ ইতোমধ্যে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে। তবে স্থানীয় সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা রয়ে গেছেন দ্বীপেই। এখানে অবস্থানরত ৭ থেকে সাড়ে ৭ হাজার মানুষ আশ্রয় নিচ্ছেন ওই সব আশ্রয় কেন্দ্রে।

আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে মূলত দ্বীপের বিভিন্ন পাকা স্থাপনাগুলোকে। যার বেশিরভাগই বাণিজ্যিকভাবে হোটেল ব্যবসায় ব্যবহার হয়।

এসব ভবনের বেশিরভাগই সর্বোচ্চ তিনতলা ভবন। আর ঝড়ের সময় এসব ভবনের দোতলা ও তিনতলায় অবস্থান করবেন উপদ্রুতরা। সেজন্য ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। খাবার ও পানীয় জলের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য আগামী দশদিনের খাবার ও পানি মজুত করা হয়েছে।

সেন্ট মার্টিনে স্থাপিত আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন দ্বীপে অবস্থানরত মানুষজন। ছবি: নিউজবাংলা

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাবিদ মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও সেন্ট মার্টিনসহ কাছাকাছি দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চলে ৮ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। জলোচ্ছ্বাসের এই উচ্চতাও ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আগামীকাল (রোববার) সকাল থেকে বিকেলের মধ্যে সেন্ট মার্টিন অতিক্রম করবে ঘূর্ণিঝড় মোখা।’

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান শনিবার বিকেল ৪টায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখনও অবস্থা স্বাভাবিক। ঝড়ো বাতাস শুরু হয়নি। তবে আস্তে আস্তে বাতাসের গতিবেগ বাড়ছে।

‘দ্বীপের ৪০ থেকে ৪২টি হোটেল ভবনকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে। প্রায় সবাই এই হোটেলগুলোতে উঠে গেছে। কিছু লোক বাকি আছে। মাইকিং করে তাদেরকেও আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে নেয়া হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত কেউই আশ্রয় কেন্দ্রের বাইরে থাকবে না।’

দ্বীপে থাকা গবাদি পশু-পাখির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পশু-পাখির বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। যার যার গৃহপালিত পশুপাখিকে খোলা জায়গায় ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। কারণ আশ্রয়কেন্দ্রে এগুলোকে জায়গা দেয়ার অবস্থা নেই।’

গত কয়েক দিনে সেন্ট মার্টিন ছেড়েছে প্রায় ২ হাজার মানুষ। তারপরও সেখানে রয়ে গেছে ৭ থেকে সাড়ে ৭ হাজার মানুষ।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের ধারণা সেন্ট মার্টিনে এখন ৭ থেকে সাড় ৭ হাজার মানুষ আছে। দেড় থেকে দুই হাজার মানুষ আগেই চলে এসেছে টেকনাফে। সেখানে থাকা মানুষের জন্য আমাদের আশ্রয় কেন্দ্র রেডি আছে। ৩৭টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত আছে। সরকারি হাসপাতাল, সরকারি রেস্ট হাউজ, ডাকবাংলো, কোস্ট গার্ডের আশ্রয় কেন্দ্র, দুটি স্কুল ছাড়া অন্য আশ্রয় কেন্দ্রগুলো খোলা হয়েছে হোটেল ও রেস্টুরেন্টে।

চেয়ারম্যান জানিয়েছেন ৪০ থেকে ৪২টি আশ্রয় কেন্দ্র করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, ‘৩৭টি তালিকাভুক্ত। এখন চেয়ারম্যান সেখানে আছেন। তাকে আমরা সেই এখতিয়ার দিয়ে রেখেছি যে, হোটেল আরও লাগলে তিনি বাড়াবেন। এই কাজে সাহায্য করবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।’

৮ থেকে ১২ ফুট এমনকি তার চেয়েও বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। সেক্ষেত্রে আশ্রয় কেন্দ্রে সমতল থেকে কতটা উঁচুতে মানুষ থাকার সুযোগ পাবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা সেন্ট মার্টিনে অবস্থান করা মানুষজনকে আশ্রয় কেন্দ্রের দোতলা ও তিনতলায় অবস্থান করতে বলেছি। সেখানে আমাদের যথেষ্টসংখ্যক হোটেল আছে। তাই ঝুঁকি নিয়ে নিচতলায় থাকার কোনো মানে হয় না।

‘ইতোমধ্যে ৫০ ভাগের বেশি মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে চলে এসেছে। যেহেতু অনেক হোটেল আছে, আর সবার বাসার পাশেই হোটেল, তাই অনেকে জিনিসপত্র ও পরিবার রেখে বাইরে আছে। আমরা ধারণা করছি যে সন্ধ্যার আছেই শতভাগ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসতে পারব।’

খাবার ও গবাদি পশুর বিষয়ে ইউএনও কামরুজ্জামান বলেন, ‘গবাদি পশু নিচতলায় রাখতে বলা হয়েছে। খাবার নিয়েও চিন্তা নেই। জেলা প্রশাসক সেন্ট মার্টিনে স্পেশাল বরাদ্দ দিয়েছেন। ব্যবসায়ীদেরও আমরা আগেই বলেছিলাম খাবার মজুদ রাখতে। খাবারের দাম যেন না বাড়ায় তা-ও বলা আছে। তারা আমাদের বলেছেন, আগামী সাত থেকে ১০ দিনের খাবার মজুদ আছে।’

কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) রফিকুল ইসলাম সেন্ট মার্টিনে অবস্থানরত পুলিশের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে পরিস্থিতি দেখভাল করছেন।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ’সেন্ট মার্টিনে অবস্থারত মানুষজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার জন্য সেখানে আমাদের পুলিশ ফাঁড়ির সব সদস্য কাজ করছেন। চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে মাইকিং করে সবাইকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। সন্ধ্যার আগেই সবাইকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর