ধেয়ে আসছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা। এর মধ্যে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে জারি করা হয়েছে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত। সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শক্তি সঞ্চয় করে কক্সবাজারের দিকে এগিয়ে আসলেও চট্টগ্রামেও পড়বে মোখার শক্তিশালী প্রভাব।
চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার মধ্যে মীরসরাই, সীতাকুণ্ড, আনোয়ারা ও বাঁশখালীর অবস্থান উপকূলীয় এলাকায়। এ ছাড়া সন্দীপ উপজেলার পুরোটাই বঙ্গোপসাগরে। ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য আক্রমণস্থল টেকনাফের সবচেয়ে কাছে রয়েছে বাঁশখালী উপজেলা।
আর তাই ঘূর্ণিঝড় মোখাকে ঘিরে উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন বাঁশখালীর উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দারা।
চট্টগ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, বাঁশখালীতে ৩৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের ১.২ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে ২০০ মিটার খানখানাবাদ ইউনিয়নের কদমরসুল এলাকায়। বাকী অংশ ছনুয়া ইউনিয়নের শেলবন পয়েন্ট ও ছনুয়ার টেক এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের সময়ও ঝুকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছিল ওই এলাকা। লবণের মাঠ, মাছের ঘের, ফসলসহ নোনাজলে ভেসে যায় শতকোটি টাকার সম্পত্তি। সেই ধকল কাটিয়ে ওঠার আগেই কড়া নাড়ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা।
ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এবার খানখানাবাদ ও ছনুয়া ইউনিয়নে বেড়িবাঁধের অতি ঝুঁকিপূর্ণ অংশগুলো সংস্কারে নেমেছেন স্থানীয়রা।
শনিবার সকাল থেকে বালি ও বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কারের চেষ্টা করছেন তারা।
খানখানাবাদ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থান অতি ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সিত্রাংয়ের সময় সেসব জায়গা দিয়ে সাগর থেকে পানি ঢুকে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাই চেয়ারম্যানের ব্যবস্থাপনায় আমরা স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বাঁধ সংস্কারের চেষ্টা করছি।’
ছনুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুনর রশীদ বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের বাঁধের অতি ঝুঁকিপূর্ণ অংশগুলো কাল থেকে স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সংস্কারের চেষ্টা করছেন। আজও ইউপি সদস্যরা স্থানীয়দের নিয়ে কাজ করছেন। আমরা আল্লাহর উপর ভরসা রাখছি।’
চট্টগ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ রয়েছে মোট ২৫০ কিলোমিটার। এর ১২ দশমিক ৭ কিলোমিটার অরক্ষিত (ঝুকিপূর্ণ ও অতি ঝুকিপূর্ণ) রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।