আসন্ন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম বাদ দিয়ে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ, নির্বাচনে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও দায়িত্বরত রিটার্নিং অফিসারকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস।
এর মধ্যেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর ডাকযোগে এ সংক্রান্ত একটি দরখাস্ত পাঠিয়েছেন বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন তিনি।
তাপস বলেন, ‘২৯ এপ্রিল আমি সংবাদ সম্মেলন করি। এরপরই ডাকযোগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর দরখাস্ত প্রেরণ করি।
‘এছাড়া গতকাল (সোমবার) জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় মহাসচিবের নেতৃত্বে আমিসহ একটি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা ছিল। তবে তিনি অসুস্থ থাকায় সাক্ষাৎ করা হয়নি। ফলে তার হাতে সরাসরি দরখাস্তটি দেয়াও সম্ভব হয়নি।’
ডাকযোগে পাঠানো ওই দরখাস্তের একটি অনুলিপি নিউজবাংলার হাতে এসেছে।
প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপসের প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়কারী ও বরিশাল মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিন-উল ইসলাম হাবুল স্বাক্ষরিত ওই দরখাস্তে বলা হয়েছে, আসন্ন বরিশাল সিটি কপোরেশন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। কিন্তু জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছে। তাই জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বরিশাল সিটির বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রত্যাশার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে অবশ্যই ইভিএমে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল করে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য জোর দাবি জানানো হচ্ছে।
নির্বাচনের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে ভোটগ্রহণ ও বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনের আহ্বানও জানানো হয়েছে দরখাস্তে।
সে সঙ্গে উপর্যুক্ত বিষয়গুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার লক্ষ্যে ২৯ মে সকাল ১০টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করার বিষয়টিও দরখাস্তে উল্লেখ করা হয়।
এ ছাড়াও দরখাস্তে বারিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার হুমায়ূন কবিরকে প্রত্যাহারে জোর দাবি জানিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করার আবেদন জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে তাপস বলেন, ‘নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য করতে হলে আগে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। সে সঙ্গে আমাদের প্রতি বিমাতাসূলভ আচরণ পরিহার করতে হবে।’
রিটার্নিং অফিসারকে প্রত্যাহারের বিষয়ে তার অভিযোগ, ‘নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন। তার আচরণে মনে হয়, কোনো এক প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ডা বাস্তবায়নে তিনি কাজ করছেন।’
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বরিশাল সিটি নির্বাচন-২০২৩ উপলক্ষে নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের উপস্থিতিতে প্রস্তুতিমূলক সভা হয়। পরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আহসান হাবিব।
এসময় বরিশালের নির্বাচন নিয়ে কোন অভিযোগ পেয়েছেন কিনা জানতে চাওয়া হলে সেরকম কিছু তার কাছে আসেনি বলে জানান কমিশনার।