রাজধানীর খিলক্ষেতে এলাকায় পাওনা ২ লাখ টাকা চাওয়ার জের ধরে ভ্রমর, হাতুড়ি ও কাটার দিয়ে ভিকটিমকে হত্যার ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তির নাম ইকরাম হোসেন মোল্যা।
শনিবার রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শান্ত ও সিদ্দিককে গ্রেপ্তার করে খিলক্ষেত থানা পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আবদুল আহাদ নিউজবাংলাকে জানান, শুক্রবার বিকেল ৩টায় খিলক্ষেত থানার ডুমনী এলাকার বাসিন্দা ইকরাম হোসেন মোল্যা নামে এক যুবকের নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
নিখোঁজ ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে ভিকটিমের পরিবার জানায়। পরদিন সকালেই ডুমনী এলাকার কাউন্সিলর গলি ছাড়িয়ে বালুচর এলাকায় একটি মরদেহ পাওয়া গেলে ভিকটিমের পরিবার তা শনাক্ত করে।
তিনি আরও জানান, তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিম বৃহস্পতিবার রাতের অবস্থান শনাক্ত করা হয় এবং কাদের সঙ্গে ভিকটিম যোগাযোগ করে তার সবকিছু নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে দুজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল থেকে খাতা সেলাইয়ের ভ্রমর, ভিকটিমকে হত্যায় ব্যবহৃত কাটার ও একটি হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভিকটিমের সঙ্গে একই এলাকায় বসবাস করা শান্তর ২ লাখ টাকা লেনদেন সংক্রান্ত ঝামেলা চলছিল। ভিকটিম ইকরাম শান্তকে বালুর ব্যবসার জন্য ২ লাখ টাকা দেন। সঠিকভাবে লাভ না দেয়ায় ইকরাম তার অর্থ ফেরত চাইলে অভিযুক্ত শান্ত তা না দেয়ার পাঁয়তারা করতে থাকে।
জিজ্ঞাবাদে আরও জানা যায়, একইসঙ্গে অন্য অভিযুক্ত সিদ্দিক ভিকটিম ইকরামের ওপর ক্ষেপে ছিল। কারণ সিদ্দিকের ধারণামতে ভিকটিম ইকরাম সিদ্দিকের মাকে তার বেপরোয়া জীবনযাপন নিয়ে বিচার দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্দিকের সঙ্গে তার মায়ের ঝগড়া হয় এবং সিদ্দিক ৫ দিন ধরে বাসার বাইরে অবস্থান করতে থাকে। অভিযুক্ত শান্ত ও সিদ্দিক তাদের ক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ভিকটিম ইকরামকে হত্যার পরিকল্পনা সাজায়।
যেভাবে হত্যা
ডিসি মো. আবদুল আহাদ বলেন, বৃহস্পতিবার শান্ত ভিকটিমকে ফোন করে ডুমনী বালুচর এলাকায় ডেকে নিয়ে আসে। পরে তারা পরিকল্পনামাফিক ভ্রমর, হাতুড়ি ও কাটার ব্যবহার করে ভিকটিমকে হত্যা করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের মরদেহ পাশের বিলের কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখার চেষ্টা করা হয়।
আসামি শান্ত রোববার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর আসামি সিদ্দিককে ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।