বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিটি ভোটের আগে সিলেট বিএনপিতে গ্রেপ্তার আতঙ্ক

  •    
  • ৬ মে, ২০২৩ ২৩:৪৯

বিএনপির নেতারা জানান, পুলিশ গত চার দিনে বিএনপির অন্তত ১৭ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। আরও অনেক নেতার বাড়িতে প্রতি রাতেই অভিযান চালানো হচ্ছে। এতে নেতাকর্মীরা বাড়িতে ঘুমাতে পারছেন না।

সিলেট সিটি নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। তারপরও এই নির্বাচন ঘিরে গ্রেপ্তার আতঙ্কে আছেন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। ভোটের আগে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্যই পুলিশ এমনটি করছে বলে অভিযোগ দলটির।

বিএনপির অভিযোগ, বিএনপি নেতা ও বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ১ মে সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার ইঙ্গিত দেয়ার পর থেকেই দলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি ও বাসায় বাসায় তল্লাশি চলছে।

দলটির নেতারা জানান, গত চার দিনে বিএনপির অন্তত ১৭ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আরও অনেক নেতার বাড়িতে প্রতি রাতেই অভিযান চালানো হচ্ছে। এতে নেতাকর্মীরা বাড়িতে ঘুমাতে পারছেন না।

তবে পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রেপ্তার হয়রানির এমন অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, কাউকে হয়রানি বা অযথা গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। যারা অপরাধী এবং যাদের বিরুদ্ধে পুরনো মামলা রয়েছে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হবে ২১ জুন। এতে বিএনপি অংশ না নিলেও দলটির নেতা আরিফুল হক চৌধুরী অংশ নিতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এমন গুঞ্জনের মধ্যেই ১ মে নগরে নিজের অনুসারীদের নিয়ে মহড়া দেন আরিফ। ওইদিন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি জানান, ২০ মে নগরের রেজিস্টারি মাঠে সমাবেশ করে এ বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবেন।

নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে আরিফ ইঙ্গিত দেয়ার পরদিন ২ মে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে নগরে মিছিল বের করে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদল। ওই মিছিল থেকে ছাত্রদলের ৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর পুলিশের ওপর হামলা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ এনে ছাত্রদলের অন্তত ২০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। এরপর থেকে গণগ্রেপ্তার শুরু হয় বলে অভিযোগ বিএনপির।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘২০ মে রেজিস্টারি মাঠে আমি সমাবেশ ডেকেছি। ওই সমাবেশ থেকেই নির্বাচন নিয়ে আমার অবস্থান স্পষ্ট করব। আমার সমাবেশে যাতে জনসমাগম না হয় তাই পুলিশ বিএনপি-ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে। আতঙ্ক ছড়াতে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’

‘সিলেটের রাজনীতিতে সব সময়ই একটা সম্প্রীতি ছিল। রাজনৈতিক বিরুদ্ধাচরণ থাকলেও পরমতসহিষ্ণুতাটা ছিল। কিন্তু এবার সেই ঐতিহ্য ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা হচ্ছে। যেকোনোভাবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে জেতানোর চেষ্টা হচ্ছে। হঠাৎ করে ভোটের আগে প্রশাসনে রদবদল করা হচ্ছে। প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের হয়রানি ও হুমকি দেয়া হচ্ছে।’

বিএনপি নেতারা বলছেন, ২ মের পর থেকে প্রতি রাতেই পুলিশ বিএনপি নেতাদের বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে। এ পর্যন্ত দলের ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সিলেট মহানগর বিএনপি শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে দাবি করেছে, বুধবার রাতে মহানগর বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক শামীম মজুমদার, ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ লাহিন, ২৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য বদরুল ইসলাম, সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক অলিবুর রহমান আলী, ছাত্রদল নেতা ইমন ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা হাবিবকে অহেতুক গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বিবৃতিতে আরও অভিযোগ করা হয়, বুধবার রাতে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাজিম উদ্দিন, ২০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লোকমানুজ্জামান, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ আহমদসহ দলীয় অনেক নেতা-কর্মীর বাসাবাড়িতে তল্লাশির নামে পুলিশ হয়রানি করচে। এ ছাড়া নেতা-কর্মীদের আটকের পর বিষয়টি পুলিশ অস্বীকার করে কয়েক ঘণ্টা পর তাদের গ্রেপ্তার দেখাচ্ছে। এতে আটক নেতা-কর্মীদের পরিবারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।

সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সিটি নির্বাচনের আগমুহূর্তে সিলেটে হঠাৎ করে পুলিশ বিএনপি নেতাদের ধরপাকড় শুরু করেছে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধরে নিয়ে আগের মামলায় অথবা নতুন কোনো মামলা দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের প্রহসনের সিটি নির্বাচনে বিএনপি যাচ্ছে না। আমাদের একজন নেতা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু এর সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু ওই নেতার একটি বক্তব্যের পর থেকেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধরে আনছে পুলিশ। পুরনো মামলাগুলো হঠাৎ করেই আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।’

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার মো. ইলিয়াস শরীফ শনিবার বলেন, ‘বিএনপির অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। পুলিশ কাউকে হয়রানি বা অযথা গ্রেপ্তার করছে না। মামলার আসামিদের ধরা পুলিশের রুটিন ওয়ার্ক। সেটাই করা হচ্ছে। তা ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা হলে মামলা ও গ্রেপ্তার হবে এটাই স্বাভাবিক।’

এ বিভাগের আরো খবর