কক্সবাজারের দুর্গম পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে অপহরণ ও ডাকাতির অন্যতম হোতা ছালেহসহ ছয়জনকে আটক করেছে র্যাব।
টেকনাফের বাহারছড়া পাহাড় এলাকা থেকে শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে তাদের আটক করে র্যাব।
আটক ছয়জন হলেন ছালেহ বাহিনীর প্রধান ৩০ বছর বয়সী হাফিজুর রহমান ওরফে ছালেহ, ৪০ বছর বয়সী নুরুল আলম নূরু, ৩৭ বছর বয়সী আক্তার কামাল সোহেল, ২৪ বছরের নুরুল আলম লালু, ২৩ বছরের হারুনুর রশিদ ও ১৭ বছরের রিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে র্যাব-১৫-এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘টেকনাফে অপহরণের প্রবণতা বেড়েছে। সম্প্রতি গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পেরে আমরা সেখানে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করি। এর মধ্যে সালেহ বাহিনী অপহরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে খবর পাই। পরে গৃহহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে সালেহ বাহিনীর প্রধানসহ ছয়জনকে আটক করি।
‘এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ৫ রাউন্ড গুলি, ৩টি একনলা বড় দেশি বন্দুক, দুটি একনলা মাঝারি বন্দুক, ছয়টি একনলা ছোট বন্দুকসহ মোট ১২টি দেশি বন্দুক, ১৭ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ৪ রাউন্ড খালি কার্তুজ, দুটি ছুরি ও ছয়টি দেশি দা উদ্ধার করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আটককৃতরা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেন, টেকনাফের দুর্গম পাহাড়ে অবস্থান করে সালেহ ডাকাতের সরাসরি নেতৃত্বে এই চক্রটি অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়, মাদক ব্যবসাসহ অন্যান্য অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তার এই সন্ত্রাসী দলে সদস্য সংখ্যা ১২ থেকে ১৫ জন।
‘সালেহর নেতৃত্বে এই সন্ত্রাসী দলটি টেকনাফের শালবাগান পাহাড়, জুম্মাপাড়া ও নেচার পার্ক, বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালীপাড়া পাহাড়, বড় ডেইল পাহাড়, কছপিয়া পাহাড়, জাহাজপুরা পাহাড়, হলবনিয়া পাহাড় ও শিলখালী পাহাড় এলাকায় অবস্থান করে অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করত।’
র্যাবের কমান্ডার বলেন, ‘কখনও অটোরিকশাচালক, কখনও সিএনজিচালক হিসেবে ছদ্মবেশ ধারণ করে তারা কক্সবাজারের হালা, হোয়াইক্যং, উনচিপ্রাং, শ্যামলাপুর, জাদিমোড়া ও টেকনাফ এলাকার স্থানীয়দের টার্গেট করে অপহরণপূর্বক মুক্তিপণ আদায় ও ডাকাতি করতেন।’
এই পর্যন্ত তারা চালকের ছদ্মবেশে অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করেছেন বলে জানান খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, প্রশাসনের তৎপরতা বাড়লে গা ঢাকা দিতে তারা পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে চলে যেতেন।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।