বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নির্বাচন নিয়ে কূটনৈতিক চাপও ‘জয়’ শেখ হাসিনার

  •    
  • ৫ মে, ২০২৩ ২১:৫৮

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব এবং দূরদর্শীতাতেই এসব অর্জন। এমনকি রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বিষয়টি স্বীকার করে নিচ্ছেন।

বিএনপির আন্দোলন স্তিমিত। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাষায়, তাদের আন্দোলনে ‘ভাটার টান’ পড়েছে। আন্দোলনে সফল হতে না পারলেও কূটনৈতিতে অনেকটাই এগিয়ে ছিলো দলটি। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এমনকি জাপানের মতো দেশের রাষ্ট্রদূতও সরকারের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিলেন। আর বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ আরও আগে থেকেই আওয়ামী লীগ সরকার থেকে দূরত্ব বজায় রাখছিল।

তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্র সফরে কূটনৈতিক চাপ কমার ঈঙ্গিত দৃশ্যমান। বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ তো সম্পর্ক জোরদার করার ঘোষণাই দিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব এবং দূরদর্শীতাতেই এসব অর্জন। এমনকি রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বিষয়টি স্বীকার করে নিচ্ছেন।

এ নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. হারুনুর রশীদ নিউজবাংলাকে বলেন, সরকারের তৎপরতাতেই কূটনৈতিক বিজয় হয়েছে। কূটনীতিকদের ভুল ভেঙ্গেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং অনেক রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের নেতারা কথা বলেছেন। সব মিলিয়ে কূটনীতিকরা তাদের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন।

রাজনৈতিক লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ যাদের এ দেশ নিয়ে কৌশলগত আগ্রহ আছে, তারা অনেক কিছুই পর্যবেক্ষণ করে। আবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার আগ্রহ সরকারে থাকতে হবে। নিশ্চয় দুইপক্ষের মধ্যে একটা বোঝাপাড়া হয়েছে। আর সেজন্যই তাদের মুখে সরকারের পক্ষে যায় এমন বক্তব্য শোনা যাচ্ছে। এখন কি দেনা-পাওনা হয়েছে সেটা শুধু দুই পক্ষই বলতে পারবে।

বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে এতদিন নেতিবাচক বক্তব্য দিয়ে আসলেও যুক্তরাষ্ট্র গত ২ মে একে ‘অভ্যন্তরীণ, ঘরোয়া নির্বাচন’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অভ্যন্তরীণ, ঘরোয়া নির্বাচন হওয়ায় এর বাইরে আমার আর কিছু বলার নেই। যেহেতু এটি নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই যুক্তরাষ্ট্র চায় যে তা অবাধ ও সুষ্ঠু হোক। বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হোক।

অথচ মাত্র মাসখানেক আগেই গত ২৩ মার্চ দেশটির ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছিলেন, ‘নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হওয়ার বিষয়টিকে মানদণ্ডের নিরিখে যাচাই করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা দলীয় সরকারের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই, এমনকি মতামতও নেই। আমরা চাই, নির্বাচনের এই পূর্বশর্তগুলো যেন থাকে, যাতে সব দল মনে করে যে তারা ন্যায্যভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব।’

এ ছাড়া গত ১১ এপ্রিল ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, বাংলাদেশে যাতে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে।

জাপানের রাষ্ট্রদূত আগের রাতে নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বলেছিলেন। জার্মান রাষ্ট্রদূত নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারকে উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেছিলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল ইসিতে গিয়ে নির্বাচনের সুস্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশ ও ভূমিকার কথা আলোচনা করেছিল। কূটনীতিকদের তৎপরতায় সরকার বিরক্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত ভিয়েনা কনভেনশনের কথা মনে করিয়ে দিতে বাধ্য হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যে কোনো দেশের সরকার পরিবর্তন করতে পারে’। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ একাধিক বক্তব্যে কূটনীতিকদের শিষ্টাচার বজায় রাখা, যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের নির্বাচনি ফলাফল মেনে না নেয়ার বিষয় উল্লেখ করেন। এমনকি তারা এমনও বলেন যে, নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়, আমরা কারো নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামাই না, অন্য কেউও যেন বাংলাদেশের নির্বাচনের বিষয়ে অতি আগ্রহী না হয়।

কিন্তু এসব কিছু অবসান হয় গত ২ মে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেলের বক্তব্যে। যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটি সফরে রয়েছেন। জাপান থেকে তার একদিন আগেই তিনি দেশটিতে পৌঁছান। কিন্তু কী এমন ঘটলো যাতে পাশার দান ঘুরে গেল?

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং কূটনৈতিক দিকটি দেকভালের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্নেল (অব.) ফারুক খান নিউজবাংলাকে বলেন, কূটনীতিকদের ভুল বার্তা দেয়া হয়েছিল। আমরা সে ভুল ভাঙাতে সক্ষম হয়েছি। তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, আলোচনা হয়েছে। আমেরিকান রাষ্ট্রদূতের বাসায় লাঞ্চ ও ডিনার হয়েছে। এসব তৎপরতায় তাদের কাছে সঠিক বার্তা গেছে।

তিনি বলেন, একইভাবে ইউরোপিয় ইউনিয়ন এর দূত এবং এসব দেশের অনেক রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেও আলোচনা হওয়ার পর তারা আসল ঘটনা বুঝতে পেরেছেন।

এ বিভাগের আরো খবর