মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে কুকুরের উপদ্রব। গত এক সপ্তাহে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ কুকুরের আক্রমণের শিকার হয়েছেন। কেবল বৃহস্পতিবারই কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছেন ২২ জন। এদের মধ্যে ১৭ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি গ্রামে কুকুরের উপদ্রব বেড়ে গেছে। প্রাণীটির কামড়ে সবচেয়ে বেশি আহত হচ্ছে ছোট শিশু ও নারীরা। অবস্থা এরকম, কুকুরের ভয়ে ছোট বাচ্চাদের একা ছাড়ছেন না অভিভাবকরা।
এদিকে কুকুরের কামড়ে আহত অনেকে অসচেতনতা থেকে হাসপাতালে আসছেন না। বিষয়টিকে অবহেলা না করে তাদের দ্রুত হাসপাতালে আসার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
উপজেলার চর বাউশিয়া গ্রামের রায়হান জানান, বৃহস্পতিবার সকালে কুকুরের কামড়ে আহত হন তিনি। তাদের এলাকার অনেকেই কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছেন।
গজারিয়া ইউনিয়নের গোসাইর গ্রামের রিপন মিয়া জানান, বাড়ি থেকে বের হয়ে কুকুরের কামড় খান তিনি। অবস্থা এখন, এমন কুকুরের ভয়ে কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না।
বালুয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) রিটু প্রধান বলেন, কিছুদিন আগে তেতৈতলা গ্রামে কুকুরের কামড়ে নারী-শিশুসহ ১৮ জন আহত হয়। বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী একজোট হয়ে কুকুরটিকে মেরে ফেলে।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার হাসপাতালে মোট ১৭ জন রোগী আসেন। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত একজন রোগী হাসপাতালে এসেছেন। কুকুরের কামড়ে তার পায়ের অল্প একটু জায়গার মাংস উঠে গেছে। তাকেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেক রোগী এমন আছেন যাদের হালকা আঁচড় লেগেছে অথবা রক্ত বের হয়নি, অসচেতনতা থেকে হাসপাতালে আসেন না, তাদের সংখ্যাও কম নয়।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোবাশ্বেরা বিনতে আলম বলেন, গত এক সপ্তাহে কুকুর এবং বিড়ালের কামড়ে আহত হয়ে অন্তত অর্ধশত মানুষ তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। একসঙ্গে এত রোগী আগে কখনো দেখিনি। হাসপাতালে ভ্যাকসিন সংকট রয়েছে। বিষয়টি মুন্সীগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।