বড় ভাইকে খুনের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আবুল খায়ের নাম-পরিচয় বদলে ছদ্মবেশে পালিয়ে ছিলেন দুই যুগ। যুবক থেকে হয়েছেন বৃদ্ধ। তবু শেষ রক্ষা হলো না।
চট্টগ্রামের পটিয়া থানা এলাকা থেকে বুধবার বিকেল ৫টার দিকে র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার হওয়া ৭১ বছর বয়সী আবুল খায়ের ফেনীর ছাগলনাইয়া থানার ভল্লবপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
র্যাব-৭-এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) নুরুল আবছার জানান, ১৯৯৩ সালে পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে দুই ভাই আবুল খায়ের ও আবদুল কাদের মিলে বড় ভাই আবু তাহেরকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। ঘটনার পর গ্রেপ্তার হলেও জামিনে বের হয়ে আত্মগোপনে চলে যান আবুল খায়ের।
এর ছয় বছর পর ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে চট্টগ্রামের পটিয়ায় বসবাস শুরু করেন আবুল খায়ের। ওই সময় দিনমজুরি ও রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগও বন্ধ রাখেন।
আসামির অনুপস্থিতিতে হত্যা মামলার বিচারকাজ শেষ হয়। আবুল খায়ের ও আবদুল কাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।
তিনি জানান, যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত দুজনকে গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে র্যাব। একপর্যায়ে বুধবার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে আবুল খায়েরকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিজের আসল পরিচয় এবং বড় ভাই খুনের ঘটনায় নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি।
যেভাবে পালিয়ে ছিলেন আবুল খায়ের
মামলার পর ১৯৯৩ সালে নিজ এলাকা ফেনী ছেড়ে চট্টগ্রামে পালিয়ে যান আবুল খায়ের। বছর দুয়েক পর পুলিশের তৎপরতা টের পেয়ে সেখান থেকে ভারতের আসামে পালানোর চেষ্টা করেন। পথে ভারতের সীমান্তরক্ষী বিএসএফের হাতে আটক হন।
এরপর ভারতের একটি কারাগারে ছয় মাস বন্দী থাকেন। ছাড়া পেয়ে সিলেট ফিরে আসেন। সেখানে ছয় মাস কাটিয়ে আবার ফেরেন চট্টগ্রামে।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় কাটান আরও তিন বছর। এরপর ১৯৯৯ সালে নাম-ঠিকানা বদলে মিজান নাম ব্যাবহার করে ভোটার হন।
এরপর স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কামাল বাজার এলাকায়। সেখানে জীবিকা নির্বাহ করেন দিনমজুরি ও রিকশা চালিয়ে। এভাবেই কাটছিল তার জীবন।
র্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া আবুল খায়েরের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পলাতক দণ্ডপ্রাপ্ত অপর ভাইকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।