চট্টগ্রামে আতশবাজির প্রলোভন দেখিয়ে সফিউল ইসলাম রহিম নামে ১১ বছর বয়সী এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত রহিমের প্রতিবেশী আযম খান ও তার বন্ধু হৃদয়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার রাতে নগরীর হালিশহর পানিরকল এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। পরে রাত ৩টার দিকে তাদের স্বীকারোক্তিতে পশ্চিম মোহড়া এলাকার নির্মাণাধীন একটি কলোনির ভেতর বালুচাপা অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গত বুধবার ছিল শিশু রহিমের জন্মদিন।
নিহত রহিম চান্দগাঁও থানার পশ্চিম মোহড়া এলাকার মো. সেলিমের ছেলে। স্থানীয় পশ্চিম মোহড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। অন্যদিকে গ্রেপ্তার ২৬ বছর বয়সী আযম খান তার প্রতিবেশী ও দূর সম্পর্কের আত্মীয়। আর হৃদয় হলেন আযমের বন্ধু।
রহিমের বাবা সেলিম উদ্দিন জানান, ২৯ এপ্রিল বিকেলে খেলতে বের হয়ে আর বাসায় ফেরেনি রহিম। অনেক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে রাতে এলাকায় মাইকিং করা হয়। এরমধ্যে রাত ১২টার দিকে এক ব্যক্তি মোবাইলে ছেলেকে ফিরে পেতে হলে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এরপর সে আর যোগাযোগ করেনি।
পরদিন তিনি জানতে পারেন, নিখোঁজের আগে রহিম তার দূর সম্পর্কের আত্মীয় (সেলিমের ভাতিজা) আযমের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলেছিল। পরে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজে আযমের সঙ্গে সেখানকার একটি নির্মাণাধীন কলোনিতে ঢুকতে দেখেন রহিমকে। সেখানেও সবাই খোঁজ করেন। পরে আযমের মোবাইলও বন্ধ পান তিনি। পুরো বিষয়টা জানানো হয় পুলিশকে।
খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর রাত ৩টার দিকে আযমের দেখানো একটি নির্মাণাধীন কলোনিতে বালিচাপা দেয়া অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছি। সে বলছে, আতশবাজি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মুক্তিপণের জন্য শিশুটিকে অপহরণ করেছে। পরে মাথার পেছনে গাছ দিয়ে আঘাত করে শিশুটিকে হত্যা করেছে৷’
তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করলে তো বাচ্চাটিকে বাঁচিয়ে রাখতো, দ্রুত মেরে ফেলতো না। বিষয়টা আসলে কী ছিল জানতে আমরা তদন্ত করছি। গ্রেপ্তার আসামির ৫ দিনের রিমান্ডও আবেদন করা হয়েছে।’
শিশু রহিমকে অপহরণের একদিন আগে তার ১২ বছর বয়সী বড় ভাইকেও একইভাবে আতশবাজির লোভ দেখিয়ে অভিযুক্ত আযম ডেকেছিল বলে জানান সেলিম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘রহিমকে অপহরণের একদিন আগে আমার বড় ছেলে সাইদুল ইসলাম করিমকে বাজি দেয়ার কথা বলে ডেকেছিল আযম। তখন সাইদুল কী যেন কাজ করছিল, তাই যেতে একটু দেরি হয়। ৫ মিনিট পর সে বের হয়ে আর আযমকে পায়নি। নয়তো সম্ভবত তাকেই অপহরণ করতো।’
রহিমের বাবা বলেন, ‘গত বুধবার ছেলের জন্মদিন ছিল। সে নেই, আমরা জন্মদিন পালন করতে পারিনি। জন্মদিনের রাতে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।’