ফরিদপুরে ১৩ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের মামলায় লিটন মাতুব্বর নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে আদালত। ধর্ষণের ঘটনার প্রায় আড়াই মাস পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়।
বুধবার দুপুরে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পর আসামিকে পুলিশি পাহারায় জেল হাজতে পাঠানো হয়।
ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পিপি স্বপন পাল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
সাজাপ্রাপ্ত ২২ বছর বয়সী লিটন ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কাউলীবেড়া গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার শিশুটি বাড়িতে বেশিরভাগ সময় একা থাকতো। তার মা বাজারে চায়ের দোকানগুলোতে পানি সরবরাহ করতো। এজন্য তাকে বেশিরভাগ সময়ই বাড়ির বাইরে কাজে ব্যস্ত থাকতে হতো।
এই সুযোগে আসামি লিটন শিশুটির বাড়িতে যাতায়াত শুরু করে। একপর্যায়ে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটির সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে।
২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় শিশুটির মা বাড়িতে ছিল না। এসময়ে লিটন তাদের ঘরে প্রবেশ করে শিশুটির মুখে কাপড় গুঁজে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি জানাজানি হলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় লিটন।
পরবর্তীতে শিশুটি ধীরে ধীরে অসুস্থ হতে থাকে। একপর্যায়ে ঘটনার প্রায় দুই মাস পর শিশুটি তার মায়ের কাছে সব কথা খুলে বললে শিশুটির মা তাকে ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এদিকে ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয়ভাবে কয়েকদফা সালিশ-বৈঠক চলে। তবে এসব সালিশের রায় মেনে নেয়নি লিটন।
এ অবস্থায় ঘটনার ৭৩ দিন পর ওই শিশুর চাচা বাদী হয়ে ২০১৭ সালের ২৪ মার্চ লিটন মাতুব্বরকে আসামী করে ভাঙ্গা থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরদিন ২৫ মার্চ শিশুটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যায়।
মামলা তদন্তের পর ২০১৭ সালের সালের ১৫ ডিসেম্বর ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রতন কুমার মণ্ডল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
স্বপন পাল বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর ৯(২) ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আসামী লিটন মাতুব্বরকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
‘আসামিকে জরিমানার এক লাখ টাকা দিতেই হবে। এখানে অনাদায়ের বিষয় রাখা হয়নি।’