আসন্ন খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন ও কাউন্সিলর পদে ৯৭ জন মনোনয়নপত্র কিনেছেন। কাউন্সিলরদের মধ্যে ৭৯ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী ও ১৮ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন।
কেসিসি নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফারাজী বেনজীর আহম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘১৭ এপ্রিল রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের পর থেকেই মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট ১০১ জন মনোনয়নপত্র কিনেছেন। ১৬ মে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র কেনা ও জমা দেয়া যাবে।’
মনোনয়ন পত্র কেনা মেয়র প্রার্থীরা হলেন- কেসিসির বর্তমান মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী আব্দুল আউয়াল, স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম শফিকুর রহমান ও আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাস।
তাদের মধ্যে তালুকদার আবদুল খালেক খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি এর আগে ২০০৮, ২০১৩ এবং ২০১৮ সালেও কেসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। এর মধ্যে ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হলেও ২০১৩ সালে বিএনপির প্রার্থীর কাছে তিনি পরাজিত হন।
এ বিষয়ে আবদুল খালেক বলেন, ‘দলের পক্ষ থেকে আমার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। আগামী ১১ মে মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করবো। তারপর মনোনয়নপত্র জমা দেবো।’
আব্দুল আউয়াল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের খুলনা মহানগর শাখার নায়েবে আমির। তিনি বলেন, ‘দল থেকে আমাকে মনোনীত করা হয়েছে। নির্বাচনের প্রস্তুতি আমরা ভালোভাবেই গ্রহণ করেছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মনোনয়নপত্র জমা দেব।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা এসএম শফিকুর রহমান ও আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাস দু’জনই জাতীয় পার্টির অনুসারী। তাদের মধ্যে এসএম শফিকুর রহমান ২০১৮ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।
শফিকুর রহমান বলেন, ‘জাতীয় পার্টি সরকারের দালালি করে। তাই ওই দলকে আমি এখন আর পছন্দ করি না। ২০১৮ সালে তারা সরকারের দালালি করার কারণে আমি মাত্র এক হাজার ৭২ ভোট পেয়েছিলাম। তাই এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছি।’
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতায় থাকার সময় জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন আবদুল গফ্ফার বিশ্বাস। তখন তিনি ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও খুলনা মহানগরের সভাপতি। ১৯৮৮ সালে খুলনা-৩ আসন থেকে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুল গফ্ফার। ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টি ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন তিনি। খুলনা মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতিও ছিলেন। এক-এগারোর পর তিনি রাজনীতি থেকে দূরে সরে যান।
আবদুল গফ্ফার বিশ্বাস বলেন, ‘জাতীয় পার্টি থেকে এখনও কাউকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। তবে আমাকে তারা মনোনয়ন কিনতে বলেছেন। শিগগির এ বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে ঘোষণা আসতে পারে। তখন আমি দলের হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেব। আর ঘোষণা না এলে স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকব।’
তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল বিএনপি এখনও সিটি নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে। দলটির পক্ষ থেকে মেয়র পদে মঙ্গলবার পর্যন্ত কেউ মনোনয়নপত্র কেনেননি।
তফসিল অনুযায়ী, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ১৬ মে ও বাছাই ১৮ মে। ২৫ মে’র মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। আর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১২ জুন।