পুলিশ কখনও হারেনি এবং ভবিষ্যতেও হারবে না বলে মন্তব্য করেছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় নিউমার্কেট অগ্নিদুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্যদের ভালো ও মানবিক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
রাজারবাগ শহীদ এসআই শিরু মিয়া মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ডিএমপি'র পক্ষ থেকে ৩৩ পুলিশ সদস্যকে পুরস্কৃত করা হয়।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। তবে কখনো পুলিশ হারেনি, ১৯৭১ সালেও পুলিশ হারেনি, ভবিষ্যতেও হারবে না। ১৯৭১ সাল থেকেই পুলিশ জনগণের পাশে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে।
‘দেশকে স্বাধীন করার জন্য পুলিশ সদস্যরা প্রথম বুক পেতে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার সময় পুলিশ সদস্য সিদ্দিকুর রহমান পালিয়ে যেতে পারতেন, তিনি কিন্তু পালিয়ে যাননি, বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে গিয়ে তিনি জীবন দিয়েছেন।
‘২০১২-১৩ সালে আগুন সন্ত্রাসের সময় পুলিশ সদস্যদের উপর হামলা নির্যাতন চালানো হয়েছে, পুড়িয়ে মারা হয়েছে। রাজশাহীতে হেলমেট দিয়ে থেতলে পুলিশ সদস্যদের হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। সেসময়ও পুলিশ পিছু হটেনি। দেশমাতৃকা রক্ষা করেছে।২০১৫-১৬ সালের দিকে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠে৷ হলি আর্টিসান হামলায়, সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ছিল টার্গেট। তখনও পুলিশ পিছপা হয়নি। সারাবিশ্বব্যাপি পুলিশ যে কাজটা করতে পারেনি, বাংলাদেশ পুলিশ কিন্তু দ্রুত সময়ের মধ্যে জঙ্গিবাদকে নিয়ন্ত্রণে এনেছে৷’
তিনি বলেন, ‘নিউমার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ যে মানবতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন, যে মানবিক কাজটি করেছেন তা নতুন কিছু নয়। তা পুলিশের দায়িত্ব মাত্র। ১৯৭১ সাল থেকেই পুলিশ সদস্যরা যে কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে পারে। তার প্রমাণ নিউ মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা।
‘আমরা সিনিয়র অফিসার, আমাদের কিছু দায়িত্ব আছে। আমার পুলিশ, আমার সহকর্মীদের উৎসাহিত করা, অনুপ্রেরণা, সাহস দেয়া আমাদের পবিত্র দায়িত্ব কর্তব্য। কারণ তারা দেশমাতৃকা রক্ষা সদা জাগ্রত।
‘ডিএমপি'র সদস্যরা যা করেছেন তা পুরস্কার দিয়ে পূরণ সম্ভব নয়। তবে ভালো কাজের স্বীকৃতি এটি। এটি ম্যাসেজ৷ বাকি সদস্যরা যেন এটা বোঝেন, উৎসাহিত হোন। পুলিশ সদস্যরা ভবিষ্যতে যারাই ভাল কাজ করবেন তাদের পুরস্কৃত করা হবে।
‘পুলিশের অবদান অনেক সম্মানিত নাগরিক অনুধাবন করতে পারেন না। আমরা কষ্ট পাই, দুঃখ পাই। কারণ চামড়া পোড়া গরমে পুলিশ সদস্যরা সারাদিন ডিউটি করেন। কিন্তু কোন ট্রাফিক পুলিশ ট্রাক ড্রাইভারের কাছ থেকে কয় টাকা নেন তার নিউজ করেন, ছবি প্রকাশ করেন। সাংবাদিক ভাইদের অনুরোধ করবো, পুলিশ অনেক ভাল কাজ করেন, সেটি প্রচার করুন। পুলিশের কষ্টের কথাগুলো তুলে ধরেন। জনগণ যেন বুঝতে পারে।’
নিনি আরও বলেন, ডিএমপি'র ৩২ হাজার ফোর্সের মধ্যে ২/১ বাদে বাকি সদস্যরা নগরবাসীর সেবাদানে নিয়োজিত ও আত্মত্যাগে প্রস্তুত। ২/১ সদস্যদের অপকর্মের, অন্যায়ের দায়-দায়িত্ব পুলিশ কখনোই গ্রহণ করবে না। কেউ যদি অন্যায় করে, পুলিশ বাহিনীর সম্মান মাটির সঙ্গে মিশিয়ে এটা মেনে নিবো না।’