কনটেইনারে মালয়েশিয়া যাওয়া বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সেই রাতুল ইসলাম ফাহিমের মৃত্যু হয়েছে।
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া গ্রামে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে পানিতে ডুবে শনিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
প্রাণ হারানো ১৪ বছর বয়সী রাতুল কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া গ্রামের দিনমজুর ফারুক মিয়ার ছেলে।
রাতুলের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী রাতুল শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে গোসল করতে পানিতে নামে। এ সময় সে পানিতে ডুব দিয়ে আর উঠতে পারেনি। আশেপাশের লোকজন তার দেহ পুকুর ভাসতে দেখে ডাক-চিৎকার শুরু করেন। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তাকে মৃত বলে জানান।
রাতুলের বাবা ফারুক মিয়া বলেন, ‘রাতুল বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। সে শারীরিকভাব অসুস্থ ছিল। কনটেইনারে মালয়েশিয়া যাওয়ার আগেও বাড়িতে আগুনে তার হাত-পা পুড়ে গিয়েছিল। ওই সময় অর্থসংকটের কারণে তাকে ভালোভাবে চিকিৎসা করাতে পারিনি। দেশে ফেরার পরও সে বেশ অসুস্থ ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘দিনমজুরের কাজ করতে শনিবার বাইরে ছিলাম। খবর পেয়ে বাড়িতে এসে তার মরদেহ দেখতে পাই। রাতুল অসুস্থ থাকায় সে পানিতে ডুব দিয়ে আর উঠতে না পারায় তার মৃত্যু হয়েছে।’
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান হিরণ জানান, খবর পেয়ে তিনি রাতুলের বাড়িতে যান এবং দাফনের জন্য আর্থিক সহায়তা করেন। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই শনিবার রাতে তার মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ১৩ নভেম্বর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন রাতুল। গত ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি জাহাজের খালি কনটেইনার মালয়েশিয়া উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ১৬ জানুয়ারি মালয়েশিয়া কলাং বন্দর জাহাজের একটি খালি কনটেইনারের ভেতর থেকে মানুষের শব্দ শুনতে পান নাবিকরা।
এরপরই কলাং বদর কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান তারা। ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় জাহাজটি জেটিতে এনে কনটেইনার খুলে ওই কিশোরকে উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে টিভিতে প্রচারিত ছবি ও ভিডিও দেখে রাতুলকে শনাক্ত করে তার পরিবারের সদস্যরা। বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় রাতুল।