বিশ্বব্যাংক বাজেট সহায়তা হিসেবে বাংলাদেশকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার দিতে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে সরে গিয়ে বিশ্বব্যাংক যে ভুল করেছে, আজকে তারা তা শুধরাতে চায়। সংস্থাটির সঙ্গে কথাবার্তা হচ্ছে।’
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শনিবার রংপুর বিভাগ ও এর আওতাভুক্ত সব ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময়, সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম অনুষ্ঠানে তিনি এসব তথ্য জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের জন্য নয়, দেশের জন্য জাপান ও ওয়াশিংটন সফরে গেছেন। মানুষের কষ্ট লাঘবে, বিশ্ব সংকটে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য নেয়া হচ্ছে।’
অর্থনৈতিক সামর্থ্যের ওপর ভিত্তি করে সাহায্য নেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিএনপির মতো দেশ বিক্রি করে সাহায্য নিচ্ছি না। বাংলাদেশের অর্থনীতি সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।’
বিএনপিকে উদ্দেশ করে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচন করতে দেবেন না- এমন দুঃসাহস দেখিয়ে লাভ নেই। সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন হবে, কেউ তা আটকাতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
শাসক দলের দ্বিতীয় শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘পাবলিক বিএনপির আন্দোলনে আসেনি। তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। বিএনপি এদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি, জঙ্গিবাদ ও অপরাজনীতির পৃষ্ঠপোষক। বিএনপির গণআন্দোলন মানুষ দেখতে পায়নি। তাদের আন্দোলনে জনগণের সম্পৃক্ততা ছিল না। ‘বাস্তবে ব্যর্থ গণআন্দোলন নিয়ে পথহারা পথিকের মতো দিশেহারা বিএনপি। তারা জানে যে সরকারের উন্নয়ন বিশ্বে সমাদৃত। বিভিন্ন জায়গায় নালিশ করলেও কোথাও থেকে তারা আশাব্যঞ্জক সাড়া পায়নি।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুখ থেকে মিথ্যা ছাড়া সত্য বের হয় না মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে বিএনপির তুলনা চলে না। আমরা আমাদের আদর্শে অবিচল, নীতিতে অবিচল ও বাংলাদেশ জন্মের চেতনায় অবিচল। এখান থেকে কোনো শক্তি আমাদের সরাতে পারবে না। তারা এখন ভয় দেখাবে, আগুন নিয়ে আসবে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশের রাজনীতিতে বিদেশিদের প্রতিক্রিয়া প্রভাব ফেলে। তাদের কাছে বার বার বিএনপি নালিশ করছে। কিন্তু নির্বাচন করতে সংবিধান আছে, সেটিই পথরেখা।
‘সংবিধানে নির্দেশিত পথেই নির্বাচন হবে, অন্য দেশের সুপারিশ বা পরামর্শ মেনে নয়। তাছাড়া আমরা তো তাদের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করি না। তাহলে তারা কেন করবে? নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। প্রহসনমূলক নির্বাচনে আমরা বিশ্বাস করি না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ দেশের রাজনীতির ইতিহাস হচ্ছে, যারা আন্দোলনে জেতে তারাই নির্বাচনে জেতে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ডেড ইস্যু, আদালত হিমাগারে পাঠিয়েছে। বিএনপি যতই দাবি করুক, তা চালু করা সমীচীন নয়।
‘যারা কথায় কথায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আসে, সরকারের পদত্যাগ দাবি করে, তারা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে চায়। তারা কোন গণতন্ত্র তারা চায়? জিয়াউর রহমানের হ্যা-না ভোটের গণতন্ত্র?’
পরে সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রাথমিক সদস্যপদ নবায়নের মধ্যদিয়ে বৃহত্তর রংপুর বিভাগে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ওবায়দুল কাদের।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী, সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।