পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে সহনীয় মাত্রা চেয়ে খুলনায় শব্দের তীব্রতা প্রায় দ্বিগুণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য মতে খুলনার শহরাঞ্চলে উৎপন্ন শব্দের তীব্রতা রয়েছে সর্বোচ্চ ১৩২ ডেসিবল। যদিও শহরাঞ্চলের শিল্প এলাকায় উৎপন্ন শব্দের তীব্রতা সর্বোচ্চ ৭০ থেকে ৭৫ ডেসিবলের উপরে থাকা উচিত নয়।
আন্তর্জাতিক শব্দসচেতনতা দিবস উপলক্ষ্যে বুধবার সকালে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আলোচনা সভা এ তথ্য জানানো হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
দিবসটি পালনে এবারের প্রতিপাদ্য ‘সুরক্ষিত শ্রবণ, সুরক্ষিত জীবন’।
সভায় কার্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত শব্দদূষণরোধে ১১৫টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। এতে ৩৪৩টি মামলার মাধ্যমে চার লাখ ৫২ হাজার পাঁচশত টাকা জরিমানা আদায় এবং ৬৬৪টি হাইড্রোলিক হর্ণ জব্দ করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছিলেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার জিল্লুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘শব্দদূষণ হ্রাস করা মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত উচ্চশব্দের মধ্যে থাকা ব্যক্তিরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকেন। বিদ্যালয়, হাসপাতাল ও আবাসিক এলাকার রাস্তায় যান চলাচলের ক্ষেত্রে যানবাহনে হর্ণের ব্যবহার যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে। একই সাথে যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ণ ব্যবহার বন্ধে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে এক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনের প্রয়োগ জরুরি।’
সভায় আরও বলা হয়, শব্দদূষণের ফলে মানুষের শ্রবণ শক্তি হ্রাস ও শ্রবণ ক্ষমতা পুরোপুরি নষ্ট হতে পারে। এছাড়া হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপ, অনিদ্রা, মানসিক চাপ, শ্রবণশক্তি হ্রাস, শিশুর মেধা বিকাশ ব্যাহত হওয়াসহ নানা রোগের কারণ এই শব্দদূষণ। এ দূষণরোধে যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ণের ব্যবহার, অযথা হর্ণ বাজানো, নির্মাণ কাজে উচ্চশব্দ সৃষ্টিকারী যন্ত্রপাতির ব্যবহার, যত্রতত্র লাউড স্পিকার ব্যবহার বন্ধ বা হ্রাস করা প্রয়োজন।
শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ অনুযায়ী, বাংলাদেশে শব্দের মানমাত্রা অতিক্রমকারী হর্ণ ব্যবহার নিষিদ্ধ। আবাসিক এলাকার পাঁচ’শ মিটারের মধ্যে শব্দ সৃষ্টিকারী যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে শব্দের মানমাত্রা অতিক্রমকারী যন্ত্রপাতি দৈনিক সর্বোচ্চ পাঁচ ঘন্টা ব্যবহার করা যাবে। তবে রাত ১০টার পর এ ধরণের যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। সন্ধ্যা সাতটা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত নির্মাণকাজে শব্দদূষণকারী যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
এ সময় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মনিরা সুলতানা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. সালমা বেগম, সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) মহাসীন আল মুরাদ ও খুলনা সদর হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কাজী আবু রাশেদ উপস্থিত ছিলেন।