বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী চাইলে সরকার আবার তাকে ছোট কারাগারে (জেল) পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকরা রুহুল কবির রিজভীর ‘ছোট কারাগার থেকে বড় কারাগারে এসেছি’বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী কারাগার থেকে বের হয়েই যে বক্তব্য রেখেছেন, তার মাধ্যমেই এটি আবারও প্রমাণিত হয় যে দেশে বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত আছে। তিনি যদি মনে করেন উনি ছোট কারাগার থেকে বড় কারাগারে এসেছেন এবং উনি যদি আবার ছোট কারাগারে যেতে চান তাহলে সরকার সে ব্যবস্থা নিতে পারে।’
হাছান বলেন, ‘বাংলাদেশে যেভাবে বিরোধী দল সকাল-বিকেল-সন্ধ্যা এমনকি মাঝেমধ্যে রাতের বেলাতেও সরকারের প্রতি বিষোদগার করছে এবং যেভাবে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে সেটির নজীর পার্শ্ববর্তী দেশেও আছে কি না তাকিয়ে দেখুন।
‘বেশি দূরে যেতে বলবো না, শুধু অনুরোধ জানাবো পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের দিকে তাকানোর জন্য। সেখানে একটি বক্তব্যের কারণে রাহুল গান্ধীর দুই বছর জেল হয়েছে, সংসদ সদস্যপদ বাতিল হয়েছে। রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে যিনি মামলা করেছেন তিনি বিজেপির একজন সদস্য, এমপি ছিলেন।
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, এদেশে বিরোধী দলের নেতারা যেভাবে বক্তব্য দেন এবং প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে আমাদের দলের নেতাদের যেভাবে আক্রমন এবং অসম্মনজনক কথা বলেন, সে জন্য কি আমরা আদালতে গেছি? এ থেকেই বোঝা যায় এখানে গণতান্ত্রিক চর্চা এবং বাকস্বাধীনতা কতো বেশি আছে। অর্থাৎ আমাদের এখানে গণতান্ত্রিক চর্চা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সেটি অনেক দেশের চেয়ে অনেক ভালো, উন্নত। এমন কি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চেয়েও অনেক ক্ষেত্রে আমাদের এখানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বেশি বলে দাবি করেন হাছান।
সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের স্বাক্ষাৎ
এর আগে সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ নেতারা তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তার দপ্তরে সাক্ষাৎ করেন। পরিষদের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম খসরু, শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ, চিত্রগ্রাহক সমিতির সভাপতি আব্দুল লতিফ বাচ্চু, প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস, এডিটরস গিল্ডের সভাপতি আবু মুসা দেবু তাদের বক্তব্যে সিনেমা হল নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য এক হাজার কোটি টাকার সহজ ঋণ তহবিল গঠনের সফল উদ্যোগ, সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের অনুরোধে হিন্দি সিনেমা আমদানির অনুমতি প্রদানসহ চলচ্চিত্র শিল্পকে এগিয়ে নিতে আন্তরিক ও কার্যকর ভূমিকার জন্য মন্ত্রী হাছান মাহমুদকে ধন্যবাদ এবং ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ এ সময় সমিতির পক্ষে ১০ দফা প্রস্তাবনা মন্ত্রীকে হস্তান্তর করেন।
এ সময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, হিন্দি সিনেমা আমদানির বিষয়ে প্রদর্শক সমিতি বহুদিন ধরে বলে আসলেও চলচ্চিত্র অঙ্গণের সব সমিতি বিশেষ করে শিল্পী সমিতি একমত না হওয়ায় আমি পদক্ষেপ নিতে রাজি হয়নি। অবশেষে আপনারা শিল্পী সমিতিকে আপনাদের সাথে সংযুক্ত করতে পেরেছেন, এ জন্য অভিনন্দন।
তিনি বলেন, বছরে ১০টি ভারতীয় সিনেমা এ দেশে আমদানি হলে আমাদের সিনেমার কোনো ক্ষতি হবে বলে আমি মনে করি না। বরং মানুষ হলমুখী হবে, অনেক হল খুলবে। তখন আমাদের ছবির জন্য আরো বড় জায়গা তৈরি হবে।
মন্ত্রী পরিচালক সমিতির প্রস্তাবগুলো যাচাই করে দেখার আশ্বাস দেন এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তদেরকে বিমান বন্দরে অগ্রাধিকারসহ ক্ষেত্র বিশেষে প্রাধিকার দেয়ার বিষয়ে একমত পোষণ করেন।