বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রস্তুত শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান

  •    
  • ২১ এপ্রিল, ২০২৩ ১৩:১৬

শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান ঈদের দিন সকাল ১০টায় শুরু হবে ঈদুল ফিতরের জামাত। জামাতে ইমামতি করবেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান ১৯৬তম ঈদুল ফিতরের জামাতের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। মুসল্লিদের নিরাপত্তায় চার স্তরে কাজ করবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এবার আগের চেয়ে দেড় গুণ বেশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে শোলাকিয়ায়। নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি বিবেচনায় মাস্ক পরে ও জায়নামাজ নিয়ে আসতে পারবেন মুসল্লিরা। তবে মোবাইল ফোন সঙ্গে নেয়া যাবে না বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এবার দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে শনি বা রোববার। শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি বিষয়টি নির্ধারণ করবে।

শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান ঈদের দিন সকাল ১০টায় শুরু হবে ঈদুল ফিতরের জামাত। জামাতে ইমামতি করবেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।

ঈদগাহ ময়দান ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এবারের ঈদের জামাতে মাস্ক, টুপি ও জায়নামাজ ছাড়া আর কিছু সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না মুসল্লিরা।

তিনি জানান, মুসল্লিরা নিরাপত্তার স্বার্থে মোবাইল ফোন ও ছাতা নিয়ে মাঠে প্রবেশ করতে পারবেন না। তবে যদি আবহাওয়া যদি খারাপ থাকে কিংবা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে ছাতা নিয়ে প্রবেশের কথা আগের দিন জানিয়ে দেয়া হবে।

শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে ঈদের দিন কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ ও ভৈরব-কিশোরগঞ্জ রোডে শোলাকিয়া এক্সপ্রেস নামে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে বলেও জানান তিনি।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, ২০১৬ সাল থেকে আমরা বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি ও করছি। এবার আগের চেয়ে দেড় গুণ বেশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে শোলাকিয়ায়। তাই আমরা কিছু বাড়তি আয়োজন করেছি। এর মধ্যে ময়দানকে লক্ষ্য করে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রতিটি মানুষ যখন ঈদগাহ ময়দানে আসবেন পুলিশের চারটি স্থাপনা পেরিয়ে আসতে হবে। সেটি চেকপোস্ট হোক বা পিকেট হোক। আবার কোথাও কোথাও পাঁচ থেকে ছয়টি স্থাপনা পেরিয়ে ময়দানে আসতে হবে। এখানে ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে ছয়টি। এর মধ্যে র‌্যাব ব্যবহার করবে দুটি আর চারটি ব্যবহার করবে পুলিশ। মাঠে চারটি ড্রোন ক্যামেরা থাকবে। থাকবে মাইনো কোলারসহ ছয়টি ভিডিও ক্যামেরা।

পুলিশ সুপার বলেন, এছাড়াও পুরো মাঠ সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। যা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হবে। মাঠে প্রবেশ ও বাহির পথ নামাজের আগের দিন জানিয়ে দেওয়া হবে। মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করতে পারে তাই আমাদের এই আয়োজন। এখানে ফায়ার সার্ভিস কাজ করবে। ছয়টি অ্যাম্বুলেন্সসহ মেডিকেল টিম থাকবে।

তিনি বলেন, পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম থাকবে। সুইপিং করা হবে। বোম ডিসপোজাল টিম ঢাকা থেকে আসবে। এছাড়াও মাঠের নিরাপত্তার জন্য পাঁচ প্লাটুন বিজিবি চাওয়া হয়েছে। র‌্যাব থাকবে। সাদা পোশাকে পুলিশ কাজ করবে। আমরা কোনো হুমকি মনে করছি না।

ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান জানান, স্নাইপার, ড্রোন ক্যামেরা, দুটি ওয়াচ টাওয়ার মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে শতাধিক র‌্যাব সদস্য মোতায়ন থাকবে। দুই থেকে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কাজ করবেন তারা। জঙ্গি হামলার কোন আশংকা নেই বলে ও জানান তিনি।

শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ বলেন, মাঠের রং করা থেকে শুরু করে মুসল্লিদের অজু ও গোসলের সকল ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, নরসুন্দা নদীর তীরে দেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত হতো এই ঈদগাহ ময়দানে। এখানে একসঙ্গে তিন লক্ষাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

এই ময়দানের আয়তন সাত একর। পুরো ঈদগাহ ময়দানের চারপাশে উঁচু দেয়াল দিয়ে বাউন্ডারি করা হয়েছে। তবে মুসল্লিরা যেন মাঠের সবদিক দিয়ে প্রবেশ ও বের হতে পারেন সে জন্য দেয়ালের মধ্যে ফাঁকা রাখা হয়েছে।

শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাতের জন্য ২৬৫টি সারি হয়। প্রতিটি সারিতে প্রায় ৫০০ করে মুসল্লি দাঁড়াতে পারেন। সব মিলিয়ে শুধু মাঠের ভেতরেই প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।

তবে মাঠের সমপরিমাণ মুসল্লি নামাজ আদায় করেন মাঠের পাশের সড়ক ও খোলা জায়গায়। সব মিলিয়ে এই ময়দানে প্রায় তিন লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

এলকাবাসী জানিয়েছেন, ১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতে একসঙ্গে প্রায় সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। আর তখন থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’। পরে এই মাঠ শোলাকিয়া নামে পরিচিতি পায়।

এ বিভাগের আরো খবর