বাগেরহাটের শরণখোলায় মারধরের মামলায় মূল আসামির পরিবর্তে (প্রক্সি) আদালতে জামিন নিতে এসে ফেঁসে গেছেন আল আমিন তালুকদার নামের এক গার্মেন্ট ব্যবসায়ী। আর মূল আসামি ফরিদ উদ্দিন মানিক পাড়ি জমিয়েছেন সৌদি আরবে।
মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিজেকে মূল আসামি ফরিদ উদ্দিন মানিক দাবি করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন প্রার্থনা করেন ব্যবসায়ী আল আমিন তালুকদার। বিচারক ভারপ্রাপ্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ড. মো. আতিকুস সামাদ জামিন আবেদন মঞ্জুর না করে আল আমিন তালুকদারকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালতে প্রক্সি দিতে আসা আল আমিন তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত
প্রক্সি দিতে আসা আল আমিন তালুকদার শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা বাজার এলাকার সুলতান তালুকদারের ছেলে। রায়েন্দা বাজার এলাকায় তার গার্মেন্টসের দোকান রয়েছে।
আর মূল আসামি উপজেলার পশ্চিম খাদা গ্রামের মৃত আব্দুস ছালাম শেখের ছেলে ফরিদ উদ্দিন মানিক বর্তমানে সৌদি আরব রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২১ মার্চ বেলা ১১টার দিকে ফরিদ উদ্দিন মানিক ও তার লোকজন রায়েন্দা এলাকায় বাদী আব্দুস সালাম ও তার ভাইদের জমি দখল করতে আসেন। এ সময় বাধা দিলে ফরিদ উদ্দিন মানিকের লোকজন বাদী আব্দুস সালামের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।
পরবর্তীতে আব্দুস সালাম শরণখোলা থানায় ফরিদ উদ্দিন মানিকসহ চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ঘটনায় ওই বছরের ৩১ মে চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে শরণখোলা থানা পুলিশ। পরবর্তীতে ফরিদ উদ্দিন মানিক ছাড়া অন্য আসামিরা আদালত থেকে জামিন নেন। আর প্রবাসী ফরিদ উদ্দিন মানিক গোপনে সৌদি আরবে পাড়ি জমান।
মামলার বাদী আব্দুস সালাম বলেন, ‘ন্যায়বিচারের স্বার্থে আমি মামলা করেছি। তবে প্রবাসীর পরিবর্তে অন্য ব্যক্তি আদালতে হাজির হয়ে কারাগারে যাওয়ার বিষয়টি আমাকে হতাশ করেছে। আমি আশা করি আদালত এ ধরনের প্রতারকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট অনিমা দেবনাথ বলেন, ‘এক আসামির স্থানে অন্য আসামি আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেয়ার চেষ্টা অনেক বড় অন্যায়। বাদীর মাধ্যমে আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। ঈদের ছুটির কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে।’
এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে, যাচাই-বাচাই করে কারা কর্তৃপক্ষও বিষয়টির সত্যতা পেয়েছে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট জেলা কারাগারের সুপার এ এস এম কামরুল হুদা। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে।’
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়কারী পুলিশ পরিদর্শক এসএম আশরাফুল আলম বলেন, ‘আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে আমরা বিয়য়টি অবগত হয়েছি।’