লেখাপড়ায় অমনোযোগী হওয়ায় শাসন করাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও গৃহশিক্ষক আহসান হোসেনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে বখাটে ছাত্ররা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের সরকারেরচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। টিউশনি করে নানাবাড়ি ফেরার পথে তার ওপর এই হামলা চালানো হয়।
আহত ওই গৃহশিক্ষক লক্ষ্মীপুর জেলার বিল্লাল হোসেনের ছেলে। তিনি ওই গ্রামে তার নানাবাড়িতে থেকে লেখাপড়া করেন। তিনি ঢাকার নিউ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পিতৃহীন আহসান নানাবাড়িতে থেকে টিউশনি করে নিজের লেখাপড়া ও সংসারের খরচ যোগান। ছাত্রদের সুবিধার্থে মঙ্গলবার তিনি দুটি ব্যাচ করে দেন। যারা বেশি মেধাবী তাদের নিয়ে তিনি একটি ব্যাচ করেন। আর একটু কম মেধাবীদের নিয়ে আরেকটি ব্যাচ করেন।
শিক্ষক আহসান হোসেনের এই পৃথক ব্যাচ করা নিয়ে আপত্তি তোলে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের সরকারেরচর গ্রাম থেকে টিউশনি করে নানাবাড়ি ফেরার পথে ওই ছাত্ররা তার ওপর হামলা চালায়। বখাটে ছাত্ররা তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। তার চিৎকারে স্থানীয়রা গিয়ে গুরুতর অবস্থায় শিক্ষক আহসানকে উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা হাসপাতালে নেয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহত আহসানের মা সুমি বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে ওদের তিন-চার বছর ধরে পড়ায়। গত কয়েকদিন ধরে ওরা পড়ালেখায় অমনোযোগী হয়ে পড়ে। এজন্য আমার ছেলে ওদের শাসন করে। এর জের ধরে ওরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল বারী উকিল জানান, ‘সংবাদ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ওই শিক্ষকের মাথায় গুরুতর আঘাত থাকায় দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। আহত শিক্ষক সুস্থ হলে বিস্তারিত ঘটনা শুনে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে ছেলেটির মা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’