নাটোরের গুরুদাসপুরে সদ্য বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগের একা নেতার দাবি, জেলে থেকেই প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন পাঠিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বদলি করিয়েছেন তিনি।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের মামলায় ১৬ দিন কারাভোগের পর মঙ্গলবার জামিনে মুক্তি পান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম।
পরে এদিন রাত সাড়ে আটটার দিকে নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা করেন তিনি। এ সময় গুরুদাসপুর থানার ওসি আব্দুল মতিনের উদ্দেশে ওই কথা বলেন নজরুল।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আজ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। আজকে আওয়ামী লীগের স্ট্যান্ডিং সেক্রেটারি এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাজতে যাবে কেন? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আমি জেলে বসে থেকে আবেদন পাঠিয়েছিলাম। আবেদন পাঠানোর আমি জেলে থাকা অবস্থায় সে (ওসি) শাস্তি পেয়েছে। তার বদলি হয়েছে।
এ সময় নজরুল ইসলাম আরও বলেন, গুরুদাসপুর থানার ওসি উপজেলাজুড়ে জামায়াত বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করেছে। ওসি সাহেব আমাকে ব্যক্তিগতভাবে শত্রুতার তালিকায় নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আমার পরিবারকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মানুষকে আমার নামে মিথ্যা মামলা করার জন্য প্ররোচণা দিয়েছে।
মতবিনিময় সভা চলাকালে অনেকেই ফেসবুকে লাইভ করেন। ওসিকে উদ্দেশ্য করে বলা কথাগুলো মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে নজরুল ইসলামের মতামত জানতে বার বার তার মোবাইলে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
ওসি আব্দুল মতিন জানান, নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাতের পাঁচটি মামলা ও একটি নিয়োগ জালিয়াতি মামলা রয়েছে। গত ২ এপ্রিল আশ্রয়ণ প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের একটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাকে জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায়। কারাগারে পাঠানোর পর একই দিনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
তিনি আরও জানান, নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নাটোর ওয়ার হেডকোয়ার্টার্সে তাকে বদলি করা হয়েছে। এখন কেউ যদি তাকে উদ্দেশ্য করে আক্রমণাত্মক কথাবার্তা বলে তাহলে কিছুই করাই নেই।
নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, জেল থেকে বের হয়ে রাতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের নিয়ে নজরুল ইসলাম মতবিনিময় সভা করেছেন। সেখানে আমিও উপস্থিত ছিলাম।
বহিষ্কার হওয়ার পর নেতা-কর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা হয় কীভাবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা তার পদে পুনর্ববহালের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুসের কাছে যাব। এই বহিষ্কার আমরা মানি না।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ. মতিন বলেন, বহিষ্কৃত নজরুল ইসলাম দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে সভা করেছেন। সেখানে ওসিকে নিয়ে ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন। এ বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে দলের ঊধ্বতনদের জানিয়েছি।