বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে ওজনে চাল কম দেয়া, মারধরের অভিযোগ

  • প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ    
  • ১৯ এপ্রিল, ২০২৩ ০৯:৫৪

মোরাদ হোসেন ভূঁইয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার চাচাতো ভাই শওকত আমাকে নিয়ে চাল আনতে গিয়েছিল। তখন ১৫ টাকা কেজি দরে সবাইকে ৩০ কেজির পরিবর্তে ২৮ কেজি করে চাল দিয়ে ৪৫০ টাকা রাখা হচ্ছিল। ওজনে চাল কম দেয়ার কারণ জিজ্ঞেস করতেই ক্ষিপ্ত হয়ে যান পরিবেশক মোজাম্মেল। বকাঝকার একপর্যায়ে মোজাম্মেলসহ তার তিন ছেলে আমাকে মারধর করেন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।’

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাচ্চুর বিরুদ্ধে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণের সময়ে ওজনে কম দেয়া ও মারধরের অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা, তবে বাচ্চু বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, বদনাম রটাতে তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হচ্ছে।

গত ৮ বছর ধরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির পরিবেশক হিসেবে চাল বিতরণ করছেন বাচ্চু। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় দাপট খাটিয়ে চাল বিতরণের সময় ওজনে কম দেন তিনি। এমন অনিয়মের প্রতিবাদ করায় মারধরের শিকারও হয়েছেন এক যুবক। এ নিয়ে উপজেলায় চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১৩ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দক্ষিণ রসুলপুর মুক্ত বাজারের (চিলার বাজার) মফিজ উদ্দিন সরকার মার্কেটে চাল বিতরণ করছিলেন পরিবেশক বাচ্চু। ওই সময় ৩০ কেজির পরিবর্তে ২৮ কেজি করে চাল দেয়া হয়। বিষয়টি দেখতে পেয়ে প্রতিবাদ করেন মোরাদ হোসেন ভূঁইয়া নামের এক যুবক। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মোজাম্মেলসহ কয়েকজন মিলে তাকে মারধর করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চাল নিতে আসা কয়েকজন জানান, খাদ্য গুদাম থেকে চাল উত্তোলনের পর প্রতি বস্তায় ঘাটতি থাকার অজুহাত দেখিয়ে কম দেন বাচ্চু। ফলে কেউ প্রতিবাদ না করে কম চাল নিয়েই বাড়ি চলে যান।

যুবলীগ নেতার মারধরের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে মোরাদ হোসেন ভূঁইয়া নামের ওই যুবক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার চাচাতো ভাই শওকত আমাকে নিয়ে চাল আনতে গিয়েছিল। তখন ১৫ টাকা কেজি দরে সবাইকে ৩০ কেজির পরিবর্তে ২৮ কেজি করে চাল দিয়ে ৪৫০ টাকা রাখা হচ্ছিল। ওজনে চাল কম দেয়ার কারণ জিজ্ঞেস করতেই ক্ষিপ্ত হয়ে যান পরিবেশক মোজাম্মেল। বকাঝকার একপর্যায়ে মোজাম্মেলসহ তার তিন ছেলে আমাকে মারধর করেন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চাল বিতরণের সময় ট্যাগ অফিসার উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও সেদিন তাকে দেখা যায়নি। মূলত যুবলীগ নেতার প্রভাব খাটিয়ে ওজনে চাল কম দিয়ে নিজের পকেট ভারী করতে এমন অনিয়ম-দুর্নীতি করছেন মোজাম্মেল। সাধারণ মানুষের সাহস নেই তার অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলার।

‘তাই আমি প্রতিবাদ করামাত্রই ইচ্ছেমতো চড়-থাপ্পড়সহ কিল-ঘুষি দিয়েছেন। প্রকাশ্যে তার এমন আচরণে নিজেই লজ্জা পেয়েছি। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এ জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে জেলা প্রশাসক, ডিডিএলজি ও উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।’

ওজনে চাল কম দেয়া আর মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরিবেশক মোজাম্মেল হক বাচ্চু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে উপজেলায় আমার প্রতিপক্ষ গ্রুপ রয়েছে। মূলত তাদের ইন্ধনেই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ তোলা হচ্ছে। কাউকে চাল কম দেয়া হয়নি, কাউকে মারধরও করিনি। আমার বিরুদ্ধে বদনাম রটাতেই এসব করা হচ্ছে।’

নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবুল মনসুর বলেন, ‘ওজনে চাল কম দেয়ার কোনো নিয়ম নেই। প্রতিবাদ করলে মারধরও করা যাবে না। এসব বিষয় খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর