বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিদ্যুৎ উৎপাদনে একের পর এক রেকর্ড, বেড়েছে লোডশেডিংও

  •    
  • ১৮ এপ্রিল, ২০২৩ ২৩:২২

সোমবারের ১৫ হাজার ৬০৪ মেগাওয়াটকে ডিঙিয়ে মঙ্গলবার রাত ৯টায় উৎপাদন হয়েছে রেকর্ড ১৫ হাজার ৬২৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। বাস্তবতা হলো, রেকর্ড উৎপাদনের পরও সারা দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় তার ইতিবাচক প্রভাব নেই। দেশের অনেক এলাকায়ই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না।

দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে একের পর এক রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে বিদ্যুৎ বিভাগের এক বার্তায় বলা হয়েছে, সোমবারের ১৫ হাজার ৬০৪ মেগাওয়াটকে ডিঙিয়ে মঙ্গলবার রাত ৯টায় উৎপাদন হয়েছে ১৫ হাজার ৬২৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

বাস্তবতা হলো, এতো বেশি উৎপাদনের পরও সারা দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় তার কোনো ইতিবাচক প্রভাব নেই। বরং দেশ জুড়ে বিদ্যুতের লোডশেডিং আরও বেড়েছে। দেশের অনেক এলাকায়ই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না।

ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কারণে চলমান তাপপ্রবাহে জনজীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। নিউজবাংলার স্থানীয় প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে জানা গেছে, অনেক এলাকায়ই দিন-রাত ২৪ ঘণ্টার অধিকাংশ সময় গ্রাহককে থাকতে হচ্ছে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায়। এতে বাড়ছে গরমজনিত রোগের প্রকোপ।

বিদ্যুৎ বিভাগ মঙ্গলবার রাতে এক বার্তায় জানায়, একদিনের মধ্যে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের আগের রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড হয়েছে। সোমবার বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছিল রেকর্ড ১৫ হাজার ৬০৪ মেগাওয়াট। মঙ্গলবার রাত ৯টায় সেই রেকর্ড ভেঙে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ১৫ হাজার ৬২৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য বলছে, এর আগে গত বছরের ১৬ এপ্রিল সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন রেকর্ড করা হয়েছিল। এরপর গত মঙ্গলবার ১৪ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলে সে রেকর্ড ভেঙে যায়।

এর একদিন পরই বৃহস্পতিবার দেশে প্রথমবারের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়িয়ে যায় ১৫ হাজার মেগাওয়াটের মাইলফলক। সেদিন ১৫ হাজার ৩০৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে নতুন রেকর্ড হয়।

উৎপাদনের সঙ্গে বেড়েছে লোডশেডিং

সারাদেশেই চলছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। অনেক জেলায় পরিস্থিতি অনেকটাই ভয়াবহ।

রোববার সিলেটে ইফতারের সময় ছিল ৬টা ১৭ মিনিটে। ঠিক দুই মিনিট আগে নগরের জিন্দাবাজার এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়। যদিও এর মাত্র আধ ঘণ্টা আগেই এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের পর বিদ্যুৎ আসে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী সুমন আহমদ বলেন, ‘দিন-রাতের বেশিরভাগ সময় তো বিদ্যুৎ থাকেই না। এখন ইফতার-সেহরির সময়ও বিদ্যুৎ মিলছে না।’

বিদ্যুতের বেহাল দশা দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা মাদারীপুরেও। সেখানে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকছে না।

মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী রুবেল মাতুব্বর জানান, চার দিন ধরে তার সন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন। এই চার দিনে এক ঘণ্টা পর পর বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। হাসপাতালের বিছানায় থাকা কষ্ট। তাই হাতপাখা নিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাতাস করছি। খুবই কষ্ট হচ্ছে।’

ঈদযাত্রার ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে এক সপ্তাহ আগেই পরিবার নিয়ে টাঙ্গাইলে গ্রামের বাড়িতে পাড়ি জমান সাংবাদিক হাসান লিটন। পেশাগত দায়িত্বটা অনলাইনে চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় তিনি বিপাকে পড়ে গেছেন।

এই সাংবাদিক জানান- ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, চার্জার ফ্যান- কোনো কিছুই চার্জ করার সুযোগটুকুও পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় উপজেলা সদরে এসে তাকে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। তা-ও নির্বিঘ্নভাবে করা যাচ্ছে না।

১০ মিনিট বিদ্যুৎ থাকলেও পরবর্তীতে ঘণ্টা কয়েক না থাকার মতো তথ্যও আরও বেশকিছু জেলা থেকে জানিয়েছেন নিউজবাংলার স্থানীয় প্রতিনিধিরা। এমনকি তারাও পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিদ্যুতের অভাবে বিপাকে পড়ছেন।

ফেনীতে অব্যাহত লোডশেডিংয়ে ‘অতিষ্ঠ’ হয়ে ফুলগাজী উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। সোমবার রাতে উপজেলার মুন্সীরহাট বাজারে পল্লী বিদ্যুতের (সাব-সেক্টর) উপকেন্দ্রে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

বিদ্যুতের রেকর্ড উৎপাদনের মধ্যেও লোডশেডিংয়ের বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, আগেই ধারণা করা হয়েছিল চলতি বছর গ্রীষ্ম, সেচ মৌসুম ও রোজা একসঙ্গে হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে সরকার পূর্বপ্রস্তুতির স্বাক্ষর রেখেছে বলেও জানান তিনি।গত ৫০ বছরের তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে চলমান নজিরবিহীন দাবদাহে ধারণার চেয়েও বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেশি বেড়ে গেছে বলে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, চাহিদা বাড়ায় দেশের অনেক জায়গায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের বেশি কষ্ট হচ্ছে।অনাকাঙ্ক্ষিত এই দুর্ভোগের জন্য সহমর্মিতা ও দুঃখ প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি উত্তরণে বিদ্যুৎ বিভাগ সর্বাত্মক কাজ করছে। শিগগিরই আবারও স্বস্তিদায়ক পরিবেশ ফিরে আসবে।

এ বিভাগের আরো খবর