রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রার পারদ গত কদিন ধরে যেভাবে ওঠানামা করছে সে পরিস্থিতির পরিবর্তনের তেমন একটা লক্ষণ আপাতত নেই। তবে ঢাকার তাপমাত্রা একটু কমতে শুরু করেছে।
তাপমাত্রা কমলেও সহসাই এ নগরে বৃষ্টি হচ্ছে না। অর্থাৎ গরমও কমার সম্ভাবনা কম। সঙ্গে আছে গরম বাতাস। তবে সিলেট বিভাগে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। এতে ওই এলাকায় কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আগামী পাঁচদিনের আবহাওয়ায় একই থাকতে পারে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
দেশের অনেক স্থানেই গড় তাপমাত্রার সর্বোচ্চ রেকর্ড ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে সম্প্রতি। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ৬০ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। পারদ উঠেছে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রিতে।
পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে।
সারা দেশের দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে জানিয়ে এতে বলা হয়, রাজশাহী, পাবনা, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
ময়মনসিংহ, চাঁদপুর, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি ও পটুয়াখালী জেলা এবং রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অবশিষ্টাংশসহ ঢাকা, রংপুর ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার হিসাবে দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় ছিল সর্বোচ্চ ৩৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময়ের মধ্যে সিলেটে বৃষ্টি হয়েছে সামান্য।
বৈশাখের প্রথম দিন গত শুক্রবার রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর পরদিন তাপমাত্রার পারদ চড়ে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রিতে। সে রেকর্ডও ভাঙে বৈশাখের তৃতীয় দিন।
রোববার নগরীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর পরদিন সোমবার তাপমাত্রার পারদ কিছুটা নিচে নামতে থাকে। এদিন রেকর্ড হয়েছে ৩৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা এ অবস্থাতে থাকতে পারে বলে ধারণা আবহাওয়া অধিদপ্তরের।
এর আগে ১৯৬০ সালের এপ্রিলে ঢাকায় তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ ছাড়া ২০১৪ সালের ১৪ এপ্রিল ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি।
প্রচণ্ড গরমে বেড়েছে ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দিসহ নানা রোগ। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভুট্টা, ধান, গমসহ মাঠের অন্যান্য ফসল। নষ্ট হয়ে ঝরে পড়ছে আম ও লিচুর গুটি। ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ।