ঈদুল ফিতরের পর পরই ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট বণিক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। আর রমরমা ঈদবাজারে এই নির্বাচন নিয়ে চলছিল ব্যাপক প্রচার।
ভোটের প্রার্থীদের ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে ফেলা হয়েছিল পুরো মার্কেট। আর শনিবার ভোরে এই মার্কেটে সৃষ্ট আগুন এসব ব্যানার-ফেস্টুনের কারণে দ্রুত ছড়িয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর।
শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিউমার্কেট ওভার ব্রিজের নিচে ব্রিফিংয়ে অধিদপ্তরের পরিচালক (উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ) লে. কর্নেল রেজাউল করিম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘মার্কেটটির ফায়ার সেফটি সিস্টেম অত্যন্ত দুর্বল ছিল। ব্যবসায়ীরা সিটি করপোরেশন থেকে একটি দোকান বরাদ্দ নিয়ে করিডোরে আরও দুই-তিনটি সাব-দোকান বানিয়েছিলেন। এ কারণে করিডোরগুলো খুবই সংকীর্ণ হয়ে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে কাপড়ের মাধ্যমে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।’
লে. কর্নেল রেজাউল করিম বলেন, ‘মার্কেটের ফলস ছাদ, উপরে প্লাস্টিক আইটেম ও ব্যানার-পোস্টারের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যত্রতত্র এভাবে ব্যানার-ফেস্টুন আর পোস্টার লাগানোর বিষয়ে আমাদের আরও সতর্ক হওয়া দরকার। এগুলো পরিহার করার সময় এসেছে।
‘আগুন এখনও পুরোপুরি নির্বাপন করা যায়নি। আমাদের ১২টি ইউনিট এখনও কাজ করছে। তবে এখন আর বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা আছে বলে আমরা মনে করছি না।’
মার্কেটের ভেতরের পরিস্থিতি সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, মার্কেটের ভেতরের সব দোকানের শাটার বন্ধ ছিল। ফলে দোকানের ভেতরের জামাকাপড় বা ফেব্রিক্সগুলো এখন মোল্ডারিং অ্যাফেক্ট হচ্ছে৷
‘তুষের আগুনের মতো কাপড়গুলো জ্বলছে। তাই আমরা প্রতিটি দোকানের শাটারগুলো খুলে খুলে পরীক্ষা করছি এবং পানি দিয়ে আগুন নির্বাপন করছি। যেহেতু আমরা একটি একটি করে দোকান পরীক্ষা করছি, তাই আগুন পুরোপুরি নির্বাপন করতে সময় লাগবে।’
আগুনে কতগুলো দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দোতলা ও তিনতলার বেশিরভাগ দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ নির্দিষ্ট সংখ্যাটি সিটি করপোরেশন বলতে পারবে। আমরা ধারণা করছি ২৫০ থেকে ৩০০ দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি জানান, আগুন নির্বাপন অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের ২৪ জন সদস্য আহত হয়েছেন। তারা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তাদের বেশিরভাগের ধোঁয়ায় শ্বাসনালীতে সমস্যা হয়েছে।