রাজধানীর নিউ মার্কেটের একটি ভবনে আগুন লাগে শনিবার ভোরে। এর আগে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার রাতের আঁধারে নিউ মার্কেট সংলগ্ন ফুট ওভারব্রিজটি ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে।
আগুন ও ফুট ওভারব্রিজ ভাঙার মধ্যে যোগসূত্র আছে বলে মনে করছেন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।
তবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীলরা বলছেন, নিউ মার্কেট ও গাউছিয়া মার্কেটের মধ্যকার ফুট ওভারব্রিজটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ঈদে বাড়তি চাপে বড় দুর্ঘটনা এড়াতে সিঁড়ির কিছু অংশ ভেঙে দেয়া হয়েছে।
নিউ মার্কেটের তৃতীয় তলার বুটিক ব্যবসায়ী মো. সজিব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সারা বছর ব্রিজ ভাঙার খবর নাই। এই ঈদের আগে চোরের মতো রাতের আঁধারে কেন ব্রিজ ভাঙতে হবে। পরশুদিন আর গতকালকে রাতে ব্রিজ ভাইঙা দিছে, যাতে মানুষ না উঠতে পারে। আজকে লাগছে আগুন। নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের শেষ করতে এটা করা হইছে।’
কারা এবং কী কারণে নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করতে চাইছে, সে প্রশ্নের জবাব জানাতে পারেননি সজিব।
ফুট ওভারব্রিজের সিড়িগুলো ভেঙে ফেলায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে আগুন ও ফুট ওভারব্রিজ ভাঙার মধ্যে কী যোগসূত্র রয়েছে তা স্পষ্ট করতে পারেননি ক্ষতিগ্রস্থরা।
বড় দুর্ঘটনা এড়াতে ব্রিজের ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা ভেঙে নতুন ফুট ওভারব্রিজ বানানো নিয়ে জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি রয়েছে। আমরা বারবার পিছিয়ে যাচ্ছিলাম। এই ঈদে ওভারলোড হয়ে যেন কোনো বড় দুর্ঘটনা না ঘটে সেজন্য সিঁড়ির দিকে সামান্য ভাঙা হয়েছে। এটা করা হয়েছে, মানুষ যাতে অবাধে চলাফেরা না করতে পারে। বেশি মানুষ উঠলে ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার চান্স আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে একটি দৃষ্টিনন্দন ওভারব্রিজ করার সকল প্রস্তুতি আমাদের আছে। এটা করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছি। ঈদে কোনো একটা দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায়িত্ব কে নিবে? যে কারণে আমরা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ব্রিজটা বন্ধ করেছি।’
নিউ মার্কেটে আগুন দুর্ঘটনা, না এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে তা তদন্ত করে দেখবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
সম্ভাব্য সকল কারণ মাথায় রেখে তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন আমাদের মার্কেটগুলো কীভাবে তৈরি করা। এর মধ্যে ফায়ার বিগ্রেড বলেছে অনেকগুলো ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট। এ রকম বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে যেকোনো ছোট্ট দুর্ঘটনায় ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটতে পারে। আমাদের পুলিশের পক্ষ থেকে আমরা সবগুলো বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত করব। এগুলো নিছক দুর্ঘটনা, নাকি এর পিছনে অন্য কোনো কারণ আছে।’