ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রায় দ্রব্যমূল্যের দাম কমানো, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের দাবি সম্বলিত মোটিফ নিয়ে অংশগ্রহণ করেছে একদল বামপন্থি শিক্ষার্থী।
শুক্রবার সকালের এ আয়োজনের সময় তাদের এসব দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড কেড়ে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বামপন্থি ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা বলেছেন, শোভাযাত্রা আয়োজক কমিটির মধ্যে থাকা ছাত্রলীগ নেতা ওম প্রকাশসহ আরও কয়েকজনের নেতৃত্বে তাদের ওই প্ল্যাকার্ড কেড়ে নেয়া হয়।
শোভাযাত্রায় বামপন্থি কয়েকজন শিক্ষার্থী প্ল্যাকার্ডে ইলিশ মাছের পেটে লেখেন, দাম কমাও, জান বাঁচাও, হাতির পেটে লেখা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ কর,পুতুলের মাঝখানে লেখেন, Abolish DSA। এ ছাড়া চাল জোটে না, ইলিশ রুই পাবো কই? মুখ বন্ধ করে দেয়া কি স্বাধীনতা? নববর্ষে পরাধীনতার শিকল ভাঙো ইত্যাদিও লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন কেউ কেউ।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ওম প্রকাশকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে কমিটির অন্য আহ্বায়ক অচিন্ত্য সাহা রায় বলেন, ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম না। তবে এরকম একটা বিষয় হয়েছে বলে শুনেছি । আমরা যারা আয়োজক কমিটিতে ছিলাম আমাদের কারও কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না । তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সম্বলিত এসব মোটিফ অনেকের কাছে দৃষ্টিকটু লেগেছে। মঙ্গল শোভাযাত্রার সাথে এসব মোটিফ বেমানান।
এই ঘটনার পর সকাল ১০টা থেকে টিএসসিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করেন বামপন্থি ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, সেখানেও তাদের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা বাধা দিয়েছে।
এসব ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। বিবৃতিতে তারা বলেন, বাংলা বর্ষবরণের দিনে দেশ ও জনগণের মঙ্গল কামনা করে অনুষ্ঠিত হয়ে আসা শোভাযাত্রায় অমঙ্গলকর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল , বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ এবং দাম কমাও জান বাঁচাও লেখাসহ গণমানুষের কথা সম্বলিত মোটিফ নিয়ে অংশগ্রহণ করলে শোভাযাত্রা চলা অবস্থায় আয়োজক সংশ্লিষ্ট কয়েকজন সরকারি তাবেদারের বাধার মুখে পড়েন গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীরা। মোটিফ কেড়ে নেয়ার চেষ্টা, ভেঙ্গে দেয়া এবং জোটের কর্মীদের লাঞ্চিত করার ঘটনা ঘটেছে।
এতে বলা হয়, বেলা ১১ টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচিতেও বাধা প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল টিম৷ এ ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
জোট নেতারা বলেন, আওয়ামী সরকারের দীর্ঘ শাসনামলে একদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে; অন্যদিকে মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকারের কথা বলতে গিয়ে, মত প্রকাশ করতে নিপীড়নমূলক আইনে দমন-পীড়নের শিকার হচ্ছে।