বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জীবনী পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি

  • প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়   
  • ১৩ এপ্রিল, ২০২৩ ১২:১৯

নুরুল হক বলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জীবনী অতুলনীয় এবং অনুকরণীয়। এরকম একজন মহান ব্যক্তির জীবনী পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাই। তার জীবন মানুষকে অনুপ্রেরণা দেবে।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সদ্যপ্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর দেশের প্রতি অবদানের স্বীকৃতি ও জীবনকর্ম যেন অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া যায় এ জন্য তার জীবনী পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি দাবি উঠেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহে শ্রদ্ধা জানানোর পর এ দাবি তোলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর।

নুরুল হক বলেন, ‘জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জীবনী অতুলনীয় এবং অনুকরণীয়। এরকম একজন মহান ব্যক্তির জীবনী পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাই। তার জীবন মানুষকে অনুপ্রেরণা দেবে।

‘এরকম একজন মানুষ কীভাবে আজীবন এবং সমাজের জন্য কাজ করে গেছেন, তার জীবনী পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার মধ্য দিয়ে আমি মনে করি তার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হবে।’

শ্রদ্ধা জানাতে এসে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এই বিদায় আমাদের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে এক বিরাট ক্ষতির কারণ। তিনি শুধু মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না, শুধু ডাক্তার ছিলেন না, তিনি আমাদের ইতিবাচক পরিবর্তনে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। বাঙালি জাতিকে পৃথিবীতে বাঙালি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা জ্ঞান-বিজ্ঞানে জাতিকে ভূষিত করা এবং পৃথিবীর মহান কাজে তিনি অগ্র সৈনিক ছিলেন।

‘তার প্রতি আমি আমার ব্যক্তিগত শ্রদ্ধা জানাই। ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমি ওনাকে চিনি। তার পরিবারে আমি গিয়েছি। তার পিতামাতার সঙ্গে আমি খেয়েছি। ভাই বোনের সাথে কথা বলেছি। এ এক অসাধারণ পরিবার। অসাধারণের মধ্যে অসাধারণ জাফরুল্লাহ চৌধুরী।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে তিনি নিজেও অনেক সম্মানিত বোধ করতেন। অনেক কারণেই এই মানুষটি মানুষের শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে থাকবেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি অসাধারণ অবদান রেখেছেন। খুব সরল প্রকৃতির খুব সাদামাটা জীবন তিনি যাপন করতেন। এটা নিঃসন্দেহে অনুকরণীয়। তিনি যে মহানুভবতা এবং মানবিক কাজ করেছেন সেটি অনুকরণীয়।’

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘জাফরউল্লাহ ভাই আমার ছাত্রজীবনের সহযোদ্ধা থেকে মুক্তিযুদ্ধের সহযোদ্ধা ছিলেন। এই দীর্ঘ সময় মানুষের শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে আমাদের যে লড়াই সেই লড়াইয়ে তিনি পাশে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকাার অর্থেই জনযোদ্ধাই ছিলেন তিনি । তিনি শুধু মুক্তিযুদ্ধ শেষ করেননি। এরপরও তিনি মুক্তিযুদ্ধের লড়াই চালিয়ে গেছেন।

‘শুধু দেশের মধ্যে নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে তার লড়াই ছিল অবিচল। আমাদের দেশের ওষুধ নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তার প্রচেষ্টাতেই আমরা এটিতে লাভবান হচ্ছি। তিনি রাজনীতি করেননি ঠিকই, কিন্তু রাজনীতিতে বিবেকের কন্ঠস্বর হিসেবে তিনি থেকেছেন।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘তিনি আমাদের চেয়ে অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ ছিলেন, অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু তারপরও যে কোনো সরকারের আমলে তিনি যে কোনো অন্যায় এবং অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কন্ঠস্বর হিসেবে সবসময় সোচ্চার ছিলেন।

‘জাফরুল্লাহ চৌধুরী সব দলমত নির্বিশেষে সবার ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন। কিন্তু উনি যখন জীবিত ছিলেন উনার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অনেকে অনেক কথা বলছে। আজকে উনি মারা যাওয়ার পরে সবাই শোক জানাচ্ছে। ভালোবাসা জানাচ্ছে। এ থেকে প্রমাণিত হয় যারা নিজের স্বার্থের কথা চিন্তা না করে মানুষের জন্যে কথা বলে, কাজ করে তারা সকলের ভালোবাসা পায়। এই ভালবাসাটা আমাদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।’

ডাকসুর সাবেক ভিপি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহর প্রতি আমাদের ঋণ অপরিসীম। তার ঋণ কোনো দিন পরিশোধ হবে না। তার প্রতি জাতির কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা উচিত। বাংলাদেশে আরেকটা জাফরুল্লাহ তৈরি হবে না। আমরা যারা গরিব মেহনতি মানুষের পক্ষে রাজনীতি করি, এর বাইরেও সর্বস্তরের মানুষ তাকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছে।’

গণ সংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘জাফরুল্লাহর অনুপস্থিতি বড় ধরনের শূন্যতা তৈরি করেছে। কিন্তু তার কাজ ও বহুমাত্রিক কীর্তি, দেশ ও মানুষের প্রতি উজার করা ভালোবাসা বর্তমান আমাদের প্রজন্ম ও অনাগত প্রজন্মকে বহুকাল ধরে অনুপ্রাণিত করবে।

‘তিনি সর্বদা মানুষের কল্যাণ, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন নিয়ে ভাবতেন। এসব পরিবর্তনের বিষয়ে যারাই ভাববেন নিশ্চিতভাবে সেখানেই ডা. জাফরুল্লাহ প্রাসঙ্গিক থাকবেন। আমরা যত দ্রুত তার জীবন থেকে শিক্ষা নিতে পারবো তত দ্রুত আমরা এগিয়ে যেতে পারবো।’

এ বিভাগের আরো খবর