সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৫ মিনিটে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ শহীদ মিনারে এসে পৌঁছায়।
মরদেহ আনার পর থেকে শহীদ মিনারে ভিড় জমতে থাকে সর্বসাধারণের। যদিও এর অনেক আগেই বিভিন্ন স্তরের মানুষ শহীদ মিনারে এসে উপস্থিত হোন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ফুল দিতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন স্ট্যান্ডার্ড ওয়ানের শিক্ষার্থী শত ধ্রুব। তিনি বলেন, ‘জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্যার একজন দেশপ্রেমিক। তাই আব্বুর সাথে উনাকে ফুল দিতে এসেছি।’
সকাল ১০টা ২২ মিনিটে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহের কফিন নামিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনস্থলে বসানো হয়েছে। ১০টা ২৭ মিনিটে শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয়।
প্রথমেই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এ কে আজাদ চৌধুরী। এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সোয়াম গ্রুপের চেয়ারম্যান খবীর উদ্দীন। ডা. হারুনর অর রশীদের নেতৃত্বে বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
দুপুর একটা পর্যন্ত শহীদ মিনারে এসে সর্বসাধারণ তার মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারবেন। শহীদ মিনারে জাফরুল্লাহকে রাষ্ট্রীয়ভাবেও সম্মান জানানো হবে। এরপর দুপুর আড়াইটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রথম জানাজা হবে।
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ডা. জাফরুল্লাহর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে তার প্রতিষ্ঠিত সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও গণবিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জুমার নামাজের পর তার দ্বিতীয় জানাজা হবে।
রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানিয়েছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন ও শ্রদ্ধা নিবেদন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আলতাফুন্নেছা।
শ্রদ্ধা নিবেদন ও জানাজা শেষে দাফন বা দেহদানের পরবর্তী কার্যক্রম বিষয়ে অধ্যাপক আলতাফুন্নেছা বলেছিলেন, ‘এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে দেহদান করেছেন শোনা গেলেও কোনো আইনি কাগজপত্র নেই। পরিবারের সদস্যরা বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে মঙ্গলবার রাতে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় মৃত্যু হয় জাফরুল্লাহ চৌধুরীর। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
পেশায় চিকিৎসক ডা. জাফরুল্লাহ একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ফিল্ড হাসপাতাল গড়ে তোলার মাধ্যমে যুদ্ধকালীন আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দিয়েছেন, অনেকের প্রাণ বাঁচিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের পর চিকিৎসা, গবেষণা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানা ধরনের কাজ করে গেছেন। জাতীয় ওষুধ নীতি ও জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নেও বড় ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের মাধ্যমে সুলভে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি।