কিশোরগঞ্জে রিকশাচালককে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়াও তাকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি পলাতক ছিলেন। এছাড়া এই মামলায় অভিযুক্ত অন্য তিন আসামি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় শিশু আদালতে তাদের বিচার কার্যক্রম চলছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২৮ বছর বয়সী মো. শফিকুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নের আমাটি শিবপুর এলাকার বাসিন্দা।
নিহত ২২ বছর বয়সী মো. শামীম মিয়া একই এলাকার বাসিন্দা। রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি।
কিশোরগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর আবু নাসের ফারুক মো. সঞ্জু এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, শামীম ও আসামিরা একই এলাকার বাসিন্দা। শামীম তার বোন জামাই ফারুকের একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ভাড়ায় চালাতেন। স্থানীয় বিভিন্ন বিষয়ে আসামিদের সঙ্গে শামীমের বিরোধ চলছিল।
২০১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সারাদিন রিকশা চালানো শেষে ফারুকের বাড়িতে চার্জ দিয়ে শামীম বাড়ির দিকে রওনা হন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বৌলাই ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের শাহীনের ফিশারির সামনে পৌঁছামাত্রই আগে থেকে ওত পেতে থাকা আবির হোসেন জনি, আলামিন, শফিকুল ইসলাম, সাজনসহ অজ্ঞাত আরও ৩ থেকে ৪ জন শামীমের পথরোধ করে। এ সময় তার মুখ ও চোখ এবং হাত পেছনে বেঁধে মারপিট শুরু করে। একপর্যায়ে শামীমের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো শরীরে। আগুনে পোড়া শরীর নিয়ে বাঁচতে পুকুরে ঝাঁপ দেন শামীম। পরে শামীমের ডাক-চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে আসামিরা পালিয়ে যায়।
শামীমকে উদ্ধার করে প্রথমে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। ঢাকায় নেয়ার পথে ১১ সেপ্টেম্বর রাত সোয়া ২টার দিকে শামীমের মৃত্যু হয়।
ঘটনার দিনই শামীমের চাচা মো. মানিক বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মুর্শেদ জামান ২০১৬ সালের ২৫ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত বুধবার মামলার রায় ঘোষণা করেন।