রাজশাহীর বাঘায় ১৯ বছর আগের চাঞ্চল্যকর কিশোরী রেবেকা খাতুন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তদন্তে উঠে এসেছে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বাবা আকসেদ সিকদার নিজের মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মা ও সৎ মা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
রাজশাহী জেলা পিবিআইর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আযাদ মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
এসময় তিনি বলেন, অভিযুক্ত আকসেদ সিকদার বাঘা উপজেলার লক্ষ্মীনগর চরের বাসিন্দা ছিলেন। ২০০৪ সালের জুন মাসে নিজ বাড়িতে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ওই তার মেয়ে রেবেকা খাতুনকে। ওই সময় তার বয়স ছিল ১৩ বছর। তার দুই স্ত্রী ৬৫ বছর বয়সী ভায়েলা বেওয়া ও ৬০ বছর বয়সী আফিয়া বেওয়া ।
আবুল কালাম বলেন, আফিয়ার মেয়ে ছিল রেবেকা। হত্যাকাণ্ডের আকসেদ সিকদার থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ঘটনার দিন দুই স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বাড়িতেই ছিলেন আকসেদ। হঠাৎ রাত ১১টার দিকে ৫০-৬০ জনকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আসতে দেখে তার দুই স্ত্রী তাকে পালিয়ে যেতে বলেন। আকসেদ সিকদার পালিয়ে গেলে প্রতিপক্ষের লোকেরা তাঁর ১৩ বছরের কিশোরীকে কুপিয়ে হত্যা করে চলে যান। এই মামলায় প্রতিপক্ষের ২০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলাটি প্রথমে থানা-পুলিশ এবং পরে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তদন্ত করে। ডিবি পুলিশ ২০০৪ সালের ৩০ নভেম্বর ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপর রাজশাহীর জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন আদালতে মামলার বিচার শুরু হয়। বিচার চলাকালে ২০২২ সালের মে মাসে আদালত মামলাটি পুনঃ তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
রাজশাহী পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক খায়রুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করেন। তদন্তে পিবিআই জানতে পারে, প্রতিপক্ষ নয়, আকসেদ সিকদারই তার মেয়েকে হত্যা করেছিলেন। এরপর তার দুই স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা জানান, এত দিন স্বামীর ভয়ে এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে তারা মুখ খুলতে পারেননি।
আবুল কালাম বলেন , এ ঘটনার সঙ্গে আকসেদ ছাড়া অন্য কেউ জড়িত ছিলেন, সে রকম কোনো তথ্য পায়নি পিবিআই। আকসেদ সিকদার ২০১৯ সালে মারা যাওয়ায় মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা যাবে না। তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে। তারপর আদালত এই মামলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। এ মামলায় বর্তমানে ২০ জন আসামি জামিনে আছেন।