চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রা না করার সিদ্ধান্তে ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়েছেন ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা নিজেদের উদ্যোগেই শোভাযাত্রা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইনস্টিটিউটের দেয়ালে এঁকে দিচ্ছেন প্রতিবাদী দেয়ালচিত্র।
চারুকলার শিক্ষার্থীরা বলছেন, সংস্কার কাজের জন্য ভেতরে প্রবেশে নিষেধ থাকায় ইনস্টিটিউটের বাইরেই তারা পহেলা বৈশাখ উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাদের এইবারের আয়োজন অনেকটা প্রতিবাদধর্মী। পহেলা বৈশাখে চারুকলা ইনস্টিটিউটের গেইট থেকে প্রতিবাদী শোভাযাত্রা বের করবেন তারা।
চারুকলা ইনস্টিটিউটে গিয়ে দেখা যায়, ইনস্টিটিউটের গেটের বাইরে সাদা-কালো রঙে দেয়াল চিত্র আঁকছেন তারা। এ সময় তারা ইনস্টিটিউটের বাইরের দেয়ালে ‘বৈশাখ গুম হয়ে গেছে’, ‘আমাদের বৈশাখ কই’, ‘চারুকলা সংস্কার নয়, স্থানান্তর চাই’ ইত্যাদি স্লোগান লিখছিলেন।
চারুকলা স্নাতকোত্তর বর্ষের শিক্ষার্থী মো. শহীদ বলেন, ‘পহেলা বৈশাখে চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে কাজীর দেউড়ি পর্যন্ত মঙ্গল শোভাযাত্রা হবে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে। এর পাশাপাশি গেইটের বাইরে দেয়ালচিত্র, আলপনা হচ্ছে। জায়গার অভাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটা হচ্ছে না। এজন্য ফটকের বাইরেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এইবারে ম্যুরাল (দেয়ালচিত্র) করছি সাদা-কালো রঙে। কালো রঙের মাধ্যমে আমরা শোক প্রকাশ করছি কারণ চবি চারুকলায় বৈশাখকে মেরে ফেলা হচ্ছে। আমাদের শোভাযাত্রাতেও সাদা-কালো রঙের আধিক্য থাকবে৷ আমাদের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের অর্থায়নে এই আয়োজন হচ্ছে।’
এর আগে গত শুক্রবার প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘চারুকলা ইনস্টিটিউট বর্তমানে বন্ধ আছে। তাই চারুকলাকেন্দ্রিক যে বর্ষবরণ ও শোভাযাত্রা, সেটি এ বছর হবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক যে শোভাযাত্রা ও দেশীয় খেলাধুলার আয়োজন, সেটি হবে।’
গত বছরের ২ নভেম্বর ২২ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ও ক্লাসবর্জন শুরু করেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। পরে সেই ২২ দফা দাবি মূল ক্যাম্পাসে ফেরার এক দফা দাবিতে রূপ নেয়। চলমান আন্দোলনের মধ্যেই গত ২ ফেব্রুয়ারি সংস্কারকাজের জন্য চারুকলা ক্যাম্পাস ও হোস্টেল এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর আরও দুই দফায় বাড়ানো হয় চারুকলা বন্ধের মেয়াদ, যা এখনও বন্ধই রয়েছে।