বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মিতু হত্যা মামলায় বাবুলসহ ৭ আসামির বিচার শুরু

  • প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম   
  • ৯ এপ্রিল, ২০২৩ ২১:৪২

প্রথম দিনে আদালতে সাক্ষ্য দেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন। এ সময় আসামি বাবুল আক্তার, আনোয়ার হোসেন, শাহজাহান মিয়া ও ওয়াসিমকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা এহতেশামুল হক ভোলাও আদালতে হাজির ছিলেন।

মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর এই মামলায় বাবুলসহ ৭ আসামির বিচার কার্যক্রম শুরু হলো।

রোববার সাক্ষ্য গ্রহণের প্রথম দিনে আদালতে সাক্ষ্য দেন মিতুর বাবা ও সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন।

চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালত তার সাক্ষ্য গ্রহণ করে।

এ সময় মামলার আসামি বাবুল আক্তার, আনোয়ার হোসেন, শাহজাহান মিয়া ও মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিমকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা এহতেশামুল হক ভোলাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুই আসামির মধ্যে কালু পলাতক ও মুছা নিখোঁজ রয়েছেন।

বাবুলের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ জানান, চার্জ গঠনের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে একটি আবেদন করা হয়েছে। তাই চার্জ গঠন ঈদের পর করার জন্য সময় চাওয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করায় পৌনে এক ঘণ্টা উভয় পক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে। এরপর আদালত চার্জ গঠনের আদেশ দিলে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন সাক্ষ্য দেয়া শুরু করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মো. আবদুর রশিদ বলেন, ‘ওনারা সময় চেয়েছিলেন, কিন্তু আমরা এর বিরোধিতা করেছি। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর আদেশ দিয়েছেন। এখন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন জবানবন্দি দিচ্ছেন।’

১৩ মার্চ স্ত্রী মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ ৭ আসামির বিচার শুরুর নির্দেশ দেয় আদালত। ওইদিন সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য ৯ এপ্রিল দিন ঠিক করে আদালত।

২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে গিয়ে নগরের জিইসি মোড় এলাকায় খুন হন তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু।

এ ঘটনায় জঙ্গিরা জড়িত দাবি করে বাবুল আক্তার মামলা করেন চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায়। তদন্ত শেষে পিবিআই গত বছরের ১২ মে এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।

হত্যায় ‘বাবুল জড়িত’ বলে সন্দেহ হলে একই দিন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন আরেকটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করা হয়। পুলিশ এ মামলায় বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখায়।

বাবুলের করা মামলায় পিবিআইয়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৪ অক্টোবর আদালতে না-রাজি দেন বাবুলের আইনজীবী। আদালত ৩ নভেম্বর চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণ না করে পিবিআইকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেয়। পরে আদালত বাবুলকে নিজের করা মামলাতেই গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেয়।

এর মধ্যে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি পিবিআই মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের করা মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এতে ওই মামলায় গ্রেপ্তার আসামি বাবুলসহ অন্যদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়। মামলাটিতে পাওয়া সব তথ্য-উপাত্ত বাবুল আক্তারের করা মামলায় একীভূত করতেও আবেদন জানানো হয়।

পিবিআইয়ের অধিকতর তদন্তে বাবুল আক্তারের করা মামলায় তাকেই আসামি করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১৩ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই।

তদন্তে বলা হয়, ২০১৩-১৪ সালে বাবুল আক্তার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কক্সবাজার জেলায় কর্মরত ছিলেন। সে সময় সেখানে কর্মরত এক বিদেশি উন্নয়নকর্মীর সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই নারীর বাসার নিরাপত্তাকর্মী সরওয়ার আলম ও গৃহকর্মী পম্পি বড়ুয়ার আদালতে দেয়া জবানিতে ওই বাসায় বাবুলের যাতায়াতের বিষয়টি উঠে আসে। তাছাড়া বাবুল আক্তারকে উপহার দেয়া ওই নারীর একটি বই জব্দ করে পিবিআই। সেই বইয়ে প্রথম দেখা ও তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়ে বাবুলের হাতে লেখা কিছু তথ্য রয়েছে।

পিবিআইয়ের অভিযোগপত্রে বলা হয়, খুনের পুরো ঘটনায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন ৬ জন। অস্ত্র সরবরাহ করেন আরেকজন। কিলিং মিশনের নেতৃত্ব দেন বাবুলের ‘সোর্স’ মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা।

২০১৬ সালে মিতু খুনের পর গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে দেয়া ওয়াসিম ও আনোয়ারের জবানবন্দিতে কামরুলের নির্দেশে খুনের কথা উঠে আসে। এরপর ২০২১ সালের ২৩ অক্টোবর আসামি এহতেশামুল হক ভোলা তার জবানবন্দিতেও বাবুলের নির্দেশে তার সোর্স মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা মিতুকে খুন করে বলে জানান।

জবানবন্দিতে ভোলা বলেছিলেন, নির্দেশ না মানলে তাকে ‘ক্রসফায়ারে’ দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন বাবুল। তবে ঘটনার কয়েক দিন পর কামরুলের পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে পুলিশ ধরে নেয়ার কথা বললেও পুলিশ বলেছে তিনি নিখোঁজ।

মামলায় যে চারজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে তারা হলেন- সাইদুল ইসলাম শিকদার ওরফে সাক্কু, আবু নাছের, নুরুন্নবী ও মো. রাশেদ। তাদের মধ্যে রাশেদ ও নুরুন্নবী হত্যাকাণ্ডের কয়েক দিন পর পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।

এ বিভাগের আরো খবর