বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সুলতানা জেসমিন মারা গেছেন তাকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করার কারণে। এ ব্যাপারে অন্তত আমাদের কোনো সন্দেহ নেই। একজন নাগরিক এবং সরকারি কর্মচারীকে এভাবে তুলে নেয়া আইনের ভয়াবহ লঙ্ঘন, সংবিধান লঙ্ঘন।’
নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর প্রতিবাদে রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল এই আলোচনার আয়োজন করে।
ফখরুল বলেন, ‘সুলতানা জেসমিন কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনি অপরাধী নন। কিন্তু একজন যুগ্ম সচিবের কথায় তাকে রাস্তা থেকে তুলে নেয়া হয়। এটা কোনো সভ্য, গণতান্ত্রিক দেশে হতে পারে না। তাকে তুলে নেয়া হলো কোন আইনে?’
বিএনপির গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার অভিযোগ তুলে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা প্রতিটি আন্দোলনে ন্যায়সঙ্গতভাবে সাংবিধানিক অধিকার আদায়ে যখন রাস্তায় দাঁড়াই, আমাদের রাস্তায় দাঁড়াতে দেয়া হয় না। গতকাল (শনিবার) সারা দেশে আমাদের কর্মসূচি ছিল।
‘বেশিরভাগ জায়গায় পুলিশ বাধা দিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার বাধা দিয়েছে। কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই তারা আক্রমণ করেছে। এমনকি তারা আমাদের ভাইস চেয়ারম্যান, যিনি বিমান বাহিনীর প্রধান ছিলেন—আলতাফ হোসেনের গাড়ি ভেঙে দিয়েছে। এভাবে অসংখ্য জায়গায় তারা আক্রমণ করেছে, আহত করেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই কর্মসূচি আমরা ঘোষণা করেছি অনেক আগে। সে অনুযায়ী কর্মসূচি চলছে। ঢাকায় পুলিশ কমিশনার বললেন- ঢাকার বাইরে সভা করা যাবে না। কেন? কোন আইনে আছে যে আপনি আমাকে বাইরে সভা করতে দেবেন না? এটা মগের মুল্লুক নাকি?
‘আমরা লক্ষ্য করছি, এই সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশটাকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তারা বিনা উসকানিতে বিরোধী দলের কর্মসূচিতে আক্রমণ করে, আঘাত করে একটা সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়।’
ফখরুল বলেন, ‘আমরা যেসব কর্মসূচি নিয়েছি সবই শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক কর্মসূচি। সংবিধান বলছে- আমাকে কথা বলার অধিকার দিতে হবে। প্রতিবাদ করার অধিকার দিতে হবে। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না, সরকার কি রাষ্ট্র?
‘আমি যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, অবশ্যই আমার কথা আমি বলব। গণতন্ত্র হচ্ছে, আমি তোমার সঙ্গে একমত না হতে পারি কিন্তু মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে আমি আমার জীবন দিয়ে হলেও রক্ষা করব। এদের (আওয়ামী লীগ) কাছে গণতন্ত্র হচ্ছে- কেবল আমিই কথা বলব, আমার কথামতো সবকিছু চলতে হবে এবং ক্রীতদাস হয়ে থাকতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ সেটা হতে দেবে না।’