স্বাধীনতার ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধিতাকারীদের শাস্তি বিধানে সংসদে আইন পাস করার দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
রোববার জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আনা কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ বিধির আওতায় আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে শাস্তি হওয়া উচিৎ। দেশকে একটা সেফ গার্ড দিতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতকারী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে মিথ্যাচারকারীদের শাস্তি বিধানে আইন পাস করা প্রয়োজন।’
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড, জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ড, সংবিধানে কাটাছেঁড়া এ সবকিছুই ছিল এদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে ফেলার অপপ্রয়াস।
‘২৩ বছরের শোষণ-বঞ্চনার পর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা এ মূল চার নীতির ভিত্তিতে দেশ পরিচালিত হচ্ছিল, ঘাতকেরা এ ধারণাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘কদিন আগে বিএনপির এক নেতা বলেছেন, (বর্তমান শাসনামল) এর চেয়ে পাকিস্তান ভালো ছিল। তারা বলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের নাকি কোনো প্রস্তুতি ছিল না। তাহলে সিক্রেট ডকুমেন্ট, প্রধানমন্ত্রী যা সংকলিত করেছেন সেসব যাবে কোথায়? পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধুকে অ্যান্টি-পাকিস্তানি বলা হয়েছে, আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলা হয়েছে, তাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলা হয়েছে, বারবার জেলে নেয়া হয়েছে, এসব ডকুমেন্ট তো আছে।
‘তারা এখনো পাকিস্তানপ্রেমী, তাদের মাথা থেকে পাকিস্তান প্রেম যায়নি। তারা মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে বিতর্কিত করে আবারও পাকিস্তান ঘরানার ধর্মীয় রাজনীতি চালু করে এদেশকে অকার্যকর করতে চায়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমি শুনেছি ল কমিশন নাকি এ ধরনের (মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের শাস্তি বিধানে) একটি আইনের প্রস্তাবনা করেছে। এ আইনটি জাতিকে সেফ গার্ডে রাখার জন্য এই মহান সংসদে পাস করার আহ্বান জানাই।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের শাস্তি বিধানে আইন করা না হলে এই রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব আরও বেশি হুমকির মুখে পড়বে।’